মাগুরায় হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

বিশ্বজিৎ সিংহ রায়, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, মাগুরাঃ
Dec 28, 2025 - 14:02
 0  3
মাগুরায় হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

মাগুরায় জেঁকে বসেছে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা। হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার স্বাভাবিক জনজীবন। শীত নিবারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের ভরসা হয়ে উঠেছে ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলো। মাগুরা শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপজেলা ও হাটবাজারে জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের কেনাকাটা।

বিশেষ করে মাগুরা শহরের প্রাণকেন্দ্র সদর থানার সামনের ফুটপাতগুলোতে সন্ধ্যার পর থেকেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শনিবার রাতে সরেজমিনে দেখা যায়, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোয়েটার, জ্যাকেট, কোট, কার্ডিগান, কানটুপি, গ্লাভস ও উলের মোজা কেনার ধুম পড়েছে। অভিজাত বিপণিবিতানের চেয়ে দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের এই দোকানগুলোতে।

ফুটপাতের বিক্রেতারা জানান, মূলত চট্টগ্রাম থেকে ‘বেল’ হিসেবে পুরোনো গরম কাপড় কিনে এনে তারা বিক্রি করেন। বিক্রেতা মো. রাসেল বলেন, “আমরা ১১-১২ হাজার টাকায় সোয়েটারের বেল এবং ১৬-২০ হাজার টাকায় জ্যাকেটের বেল কিনে আনি। শীতের এই তিন মাসই আমাদের মূল ব্যবসার সময়। শীত যত বেশি পড়ে, বেচাবিক্রিও তত বাড়ে।”

দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তরিকুল ইসলাম জানান, একটি বেলে সাধারণত ১২০ থেকে ১৬০ পিস জ্যাকেট পাওয়া যায়। গত ৭-৮ দিন ধরে তীব্র শীত থাকায় বিক্রি অনেক বেড়েছে বলে জানান আরেক বিক্রেতা এনায়েত হোসেন। তিনি বলেন, “এখানে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০০ টাকার মধ্যেই বিভিন্ন মানের গরম কাপড় পাওয়া যাচ্ছে।”

শহরের ইসলামপুর পাড়ার বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, “মাগুরায় প্রচণ্ড শীত পড়ছে। তাই নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জন্য ফুটপাতের গরম কাপড় বড় ভরসা। তুলনামূলক কম দামে এখান থেকে ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়।”

এদিকে তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর ও রিকশাচালকরা। রিকশাচালক আলী হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, “শীতে রাস্তায় বের হওয়াই কষ্টকর। যাত্রীও কম পাওয়া যায়। তারপরও পরিবার চালাতে এবং শীত থেকে বাঁচতে কষ্ট করে গরম কাপড় কিনতে হচ্ছে।”

ঘন কুয়াশার কারণে জেলার সড়কগুলোতে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন, এতে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে শীতার্ত ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সহায়তা কার্যক্রম জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow