ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মব সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
দেশব্যাপী অব্যাহত মব সন্ত্রাস, হত্যা, নৈরাজ্য এবং গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব চত্বরে ‘গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য’-এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি, ভালুকায় গার্মেন্টস কর্মী দীপু চন্দ্র দাস এবং লক্ষ্মীপুরে অগ্নিসংযোগে শিশু আয়েশা ও মুন্নী হত্যার ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেন। পাশাপাশি প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট ও উদীচী কার্যালয়ে হামলা-অগ্নিসংযোগ এবং প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হেনস্তাসহ গ্লোবাল টিভির সাংবাদিক নাজনীন মুন্নীকে হুমকির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের আহবায়ক অ্যাডভোকেট আবদুন নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ভাসানী চর্চা কেন্দ্রের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল বণিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. বাহারুল ইসলাম মোল্লা, জেলা উদীচীর সভাপতি জহিরুল ইসলাম স্বপন, অনুশীলন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. নাসির, সাহিত্য একাডেমির পরিচালক অ্যাডভোকেট মানিক রতন শর্মা, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শাহাদৎ হোসেন, টিইউসির সভাপতি আল মামুন, কবির কলম সভাপতি হুমায়ুন কবির, প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি মো. শাহজাহান ও সোনালী সকাল সভাপতি ফাহিম মুনতাসির প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল যে, কর্তৃত্ববাদের অবসান ঘটিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের উদাসীনতায় উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর অপতৎপরতা এবং মব সন্ত্রাস দিন দিন বেড়েই চলেছে। ধর্ম অবমাননার অজুহাতে মানুষকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মারা এবং মাজার ভাঙার মতো ঘটনা জুলাইয়ের চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হলেও দেশজুড়ে চলমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে জনমনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত গোষ্ঠীগুলোকে কঠোর হস্তে দমনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়। অন্যথায় জনগণ পুনরায় রাজপথে নামতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
সমাবেশ শেষে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
What's Your Reaction?
জান্নাত আক্তার, সদর উপজেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ