বান্দরবানে আরাকান আর্মির জন্য পাচারের সময় ১৫০০ মশারি ও বোটের পাখা জব্দ
বান্দরবানের থানচি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’র জন্য পাচারের সময় বিপুল পরিমাণ মশারি ও বোটের ইঞ্জিনের পাখা জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজন বোট চালক ও একজন বিক্রেতাসহ মোট পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। গত বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে থানচি উপজেলার তিন্দু মুখ বিজিবি চেকপোস্টে মালবাহী বোট তল্লাশি করে এসব মালামাল জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে জব্দকৃত মালামাল ও আটককৃতদের থানচি থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে তিন্দু মুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় তিনটি ইঞ্জিন চালিত বোটকে থামার সংকেত দেন বিজিবি সদস্যরা। এসময় একটি বোট দ্রুত পালিয়ে গেলে বিজিবির সন্দেহ বাড়ে। পরে বাকি দুইটি বোট আটক করে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশিতে বোটগুলো থেকে চীন থেকে আমদানিকৃত ১ হাজার ৫০০ পিস উন্নতমানের মশারি এবং ১২০ পিস বোটের ইঞ্জিনের পাখা (প্রপেলার) উদ্ধার করা হয়। বিজিবি জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা স্বীকার করেছেন যে, এসব মালামাল থানচি উপজেলার বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নেওয়া হচ্ছিল।
এ ঘটনায় আটককৃতরা হলেন—ছোট মদকের সাখয়উ পাড়ার বাসিন্দা বোট চালক থোয়াই হ্লা চিং মারমা, বড় মদকের পাইমং পাড়ার উমং সাইং মারমা, নারিকেল পাড়ার হ্লাচিংথোয়াই মারমা, ছোট মদকের বাসিন্দা উক্যছাইন মারমা এবং বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাসিয়াখালী কুমারী বাজারের বাসিন্দা ও মালামাল বিক্রেতা মো. ইউনুস। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, সাএ মারমা নামের এক ব্যক্তি তাদের নৌকাগুলো ভাড়া করেছিলেন, যিনি বিজিবির ধাওয়ার মুখে দ্রুতগামী অন্য একটি নৌকায় করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
বলিপাড়া ৩৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন জানান, আমাদের নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য ছিল যে একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মশারি ও নৌকা ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ ক্রয় করে মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্পগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় তল্লাশি চালিয়ে এসব মালামাল জব্দ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং থানচি ও রুমা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তসলিম হুসাইন জানান, বিজিবি কর্তৃক আটককৃত ৫ জন এবং জব্দকৃত মালামাল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
What's Your Reaction?
অনুপম মারমা, থানচি প্রতিনিধি, বান্দরবানঃ