নতুন সমীকরণে মাঠ গোছাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত, প্রচারণায় এনসিপির নেতারাও
ফরিদপুরের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করা আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম স্থগিত) অনুপস্থিতি এবার নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। নির্বাচনী মাঠে এখন সক্রিয় হচ্ছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল। প্রার্থী ঘোষণা করে তারা ইতিমধ্যেই গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও প্রচারণা শুরু করেছে।
ফরিদপুরের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে বিএনপি তিনটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। একটিতে দলীয় কোন্দলের কারণে এখনও প্রার্থী নির্ধারণ হয়নি। অন্যদিকে জামায়াত চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে আগেভাগেই তৎপরতা চালাচ্ছে। ইসলামি দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন পৃথকভাবে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে। এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কিছু নেতা দুইটি আসনে সক্রিয়। বামপন্থী দলগুলোর মধ্যে সিপিবি দুটি আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে।
ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী)
এই আসনে বিএনপি কখনো জিততে পারেনি। দলের মধ্যে ‘কোন্দল’ থাকায় এখনও প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। জামায়াত মনোনয়ন দিয়েছে ঢাকা জেলা শুরা সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াস মোল্লাকে। মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আছেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুদ্দীন মিয়া ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মৃধা।
ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা)
এ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদকে। বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন নগরকান্দা উপজেলা জামায়াতের আমির সোহরাব হোসেন। খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় অভিভাবক সদস্য শাহ আকরাম আলীও এখানে উল্লেখযোগ্য প্রার্থী হিসেবে আছেন।
ফরিদপুর-৩ (সদর)
এ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে নায়াব ইউসুফকে, যা দলের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে জনসভা করেছেন স্থানীয় নেতারা। শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন সাবেক এমপি এ কে আজাদ। জামায়াত, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, সিপিবি ও এনসিপির বিভিন্ন নেতা-মতাজন মাঠে তৎপর।
ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন)
বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামকে। জামায়াত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভাঙ্গা উপজেলার আমির সরোয়ার হোসেন। এছাড়া খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলনের স্থানীয় নেতারা নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করছেন।
প্রার্থী ও দলগুলো ভোটারদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে তাদের সমর্থন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হবে।
What's Your Reaction?
খোলাচোখ ডেস্কঃ