মানব পাচার মামলায় বায়রার সাবেক নেতা ফকরুল গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
Nov 11, 2025 - 12:18
 0  5
মানব পাচার মামলায় বায়রার সাবেক নেতা ফকরুল গ্রেপ্তার

মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরির আশ্বাসে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন ২৮ জন শ্রমিক। অভিযুক্তরা কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়ে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ফখরুল ও জসিম নামে দুই ব্যক্তি মালয়েশিয়ার বিভিন্ন কোম্পানিতে শ্রমিক নিয়োগের প্রলোভন দেখান। তারা জানান, নিউ ভিশন গ্রীন ল্যান্ড, এসএনডি, প্রিমভিনান ডান কেজুরটিউরান এসইইএ এসএনডি, চাই চাং ফুড ইন্ডাস্ট্রি এসএনডি— এসব প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নেওয়ার চাহিদা রয়েছে। পাসপোর্ট জমা দিলে শ্রমিক পাঠানো সম্ভব হবে বলে তারা আশ্বাস দেন।

এরপর ফখরুল ও জসিম শ্রমিক পাঠানোর শর্ত হিসেবে প্রতি পাসপোর্টে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। বাদী সরল বিশ্বাসে ২০২৩ সালের ২৭ মে রাজধানীর বনানী থানাধীন আহমেদ ইন্টারন্যাশনাল অফিসে বসে ৫৫ জন কর্মী পাঠানোর বিষয়ে মৌখিক চুক্তি করেন এবং তাদের হাতে নগদ তিন কোটি দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন।

পরে ২০২৩ সালের ২৭ জুন মালয়েশিয়ার ইকো ইন্টেরিয়র্স ইন্টারন্যাশনাল নামক প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে ২৪ জন কর্মীর পাসপোর্ট সংগ্রহ করা হয়। ওই কর্মীরা হলেন— রফিকুল ইসলাম, সাগর আলী, রাজু আহমেদ, ইয়াসিন আরাফাত, রাকিব হাসান, আব্দুল আলিম, আলমগীর হোসেন, এনামুল হক, রইজুল ইসলাম, শরিফ আহমেদ, আসাদুল ইসলাম, রাসেল ব্যাপারী, লিটন মিয়া, জামাল শাকি, মো. হুমায়ুন কবির, মোস্তফা আলী, সাগর মিয়া, আব্দুল আলীম, আমিরুল ইসলাম, মোহাব্বত আলী, শিহাব উদ্দিন, আলীফ আহমেদ, চনু মিয়া ও সজিব হোসেন।

তাদের পাশাপাশি চাই চাং ফুড ইন্ডাস্ট্রি, এসএনডি কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুজন খান, নূর আলম খান এবং এলবিএস ইন্ডাস্ট্রিজে বাবলু ও বাদলসহ আরও চারজনকে পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে ২৮ জন কর্মীকে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়, কিন্তু তাদের প্রতিশ্রুত কোম্পানিতে চাকরি না দিয়ে অন্যত্র আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে আবারও টাকা দাবি করা হয়।

ঘটনা জানতে পেরে বাদী রুবেল তার এজেন্সির মাধ্যমে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আসামিরা প্রথমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও পরে তা এড়িয়ে যান। বাদী শ্রমিকদের দেশে ফেরত আনা বা তাদের কর্মস্থলে পুনর্বহালের দাবি জানালে তারা নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। অবশেষে বাদী ১ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত চান, যা এখনও বকেয়া রয়েছে।

এদিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ফখরুল পূর্বেও একইভাবে একাধিক ব্যক্তিকে বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারণা করেছেন। মানবপাচার ও প্রতারণা আইনে তার বিরুদ্ধে আগেও মামলা ছিল, তবে তিনি বিভিন্ন সময়ে আইনের ফাঁকফোকর গলে পার পেয়ে যান।

ভুক্তভোগীরা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার ও অর্থ ফেরতের দাবি জানিয়েছেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow