চারদিকে অথৈ জল, মাঝখানে বাঁচার লড়াই। আলফাডাঙ্গার চরে প্রশ্ন একটাই—ত্রাণ মিলবে কবে?

চারদিকে অথৈ পানি। তার মাঝেই ভাসছে ডুবন্ত ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র আর অসহায় মানুষের স্বপ্ন। মধুমতি নদীর ফুঁসে ওঠা পানিতে এভাবেই সর্বস্বান্ত ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের চরবেলবানা গ্রামের শত শত পরিবার। টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় সৃষ্টি হয়েছে এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। পানিবন্দি মানুষ শুধু বেঁচে থাকার জন্য একমুঠো ত্রাণ ও একটু বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার করছে।
হঠাৎ আসা এই বন্যায় সব হারিয়ে দিশেহারা চরবেলবানার বাসিন্দারা। গ্রামের জাহিদুল ইসলাম অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, "চোখের সামনে সব ভেসে গেল। কোনো প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগটুকুও পাইনি। ছেলেমেয়েদের নিয়ে অভুক্ত অবস্থায় আছি। ঘরে এক ফোঁটা বিশুদ্ধ পানি নেই, খাবার নেই।"
আরেক বাসিন্দা রেক্সোনা বেগম বলেন, "আমাদের সব শেষ। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল নিয়ে পানির মধ্যে ভাসছি। সরকারের লোকেরা যদি তাড়াতাড়ি সাহায্য না করে, আমরা মরে যাব।"
বন্যাদুর্গতদের অভিযোগ, সরকারি ত্রাণ তৎপরতা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। বানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফ হারুন আর রশিদ বলেন, "চরাঞ্চলের মানুষের দুর্দশা চোখে দেখা যায় না। আমি প্রশাসনের কাছে জরুরি ভিত্তিতে আরও ত্রাণ এবং চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোর জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।"
আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল জানিয়েছেন, "আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছে এবং দুর্গতদের তালিকা করে দ্রুত আরও সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।" উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৈকতও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন মধুমতির পানি আরও বাড়তে পারে। ফলে, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
What's Your Reaction?






