বিএনপি সংঘর্ষ মামলায় খোশবুর রহমান খোকনসহ তিন নেতার জামিন

রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ নিয়ে তীব্র উত্তেজনা, ঠিক তখনই আদালতের এক আদেশে দৃশ্যপটে এলো স্বস্তি। প্রতিপক্ষকে মারধরের অভিযোগে আটকের মাত্র ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই জামিন পেলেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোশবুর রহমান খোকনসহ তিন শীর্ষ নেতা।
শনিবার (৪ অক্টোবর) ফরিদপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ. সাঈদের আদালতে অনুষ্ঠিত এক শুনানি শেষে বিচারক এই জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোশবুর রহমান খোকন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আরব আলী এবং পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে। বিএনপির দুই গ্রুপ— খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু— এর সমর্থকদের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এ সময় খন্দকার নাসির গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের নেতা ও বোয়ালমারীর সাবেক ছাত্রদল নেতা বনি আমিন এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এ. কে. এম. উজ্জ্বল হোসেনের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নেতা বনি আমিন বাদী হয়ে খোশবুর রহমান খোকনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩০-৩৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে আলফাডাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এরই জেরে শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে ঝুনু গ্রুপের নেতাকর্মীরা যখন আলফাডাঙ্গা বাজার এলাকায় একটি মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই উপজেলা সদর বাজারের কলেজ রোডের চুয়াল্লিশ মোড় এলাকা থেকে খোশবুর রহমান খোকন (৫০), রমজান মোল্লা (৩৩), আরব আলী (৩৫) ও নজরুল ইসলাম নামে চারজনকে পুলিশ আটক করে।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মারামারি সংক্রান্ত একটি মামলায় তিনজন এজাহারনামীয় আসামিসহ মোট চারজনকে আটক করার পর আদালতের নির্দেশে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছিল।
শনিবার আদালতে জামিন শুনানিতে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। শুনানি শেষে আদালত তদন্তে হস্তক্ষেপ না করার শর্তে এবং জামিন প্রার্থীদের পক্ষে প্রতিরোধমূলক প্রভাবের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে খোকন, আরব আলী ও নজরুল ইসলামের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে আটক অপর একজনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।
এই রায়কে "সত্যের জয়" হিসেবে অভিহিত করে উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা অভিযোগ করে বলেন, "এটি একটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা। আদালতের রায় প্রমাণ করেছে সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী।"
এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা কমলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ টহল জোরদার করা হয়েছে বলে ওসি শাহজালাল আলম জানিয়েছেন।
What's Your Reaction?






