রুমা বাস টার্মিনালের পাশে কাঠের স্তূপে জনস্বার্থ হুমকির মুখে

বান্দরবানের রুমা বাস টার্মিনালের লাগোয়া স্থানে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কাঠের স্তূপ করার অভিযোগ উঠেছে রুমা কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. মাসুদ রানা মাসুম ও সাধারণ সম্পাদক পিপলু মারমার বিরুদ্ধে।
প্রায় এক মাস ধরে বিভিন্ন স্থান থেকে আনা কাঠ টার্মিনালের উত্তর-পশ্চিম পাশে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। কাঠের গাড়ি লোড-আনলোডের কাজও চলছে সেখানে। ফলে যাত্রীদের চলাচলে ভোগান্তি যেমন বাড়ছে, তেমনি টার্মিনাল এলাকায় জানমালের ঝুঁকিও দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে রুমা বাস টার্মিনাল চালু হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। প্রতিদিন বাড়তে থাকা যাত্রী ও যানবাহনের চাপে টার্মিনাল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলেও এর পাশে অবৈধভাবে কাঠ রাখায় পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রী কাউন্টারের পাশেই বড় বড় গাছের স্তুপ রাখা হয়েছে। কাঠ বহনকারী ট্রাকের ভারী চাকার চাপায় বাস টার্মিনালের পানি সরবরাহ লাইনের প্লাস্টিক পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশে বড় বড় গর্তও তৈরি হয়েছে।
কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পিপলু মারমা দাবি করেছেন, যেখানেই কাঠ রাখা হয়েছে তা বাস টার্মিনালের জায়গা নয়। ওই জমি তারা জুয়েল বমের কাছ থেকে দুই বছরের জন্য ভাড়া নিয়েছেন। তবে ভাড়া চুক্তি লিখিত নাকি মৌখিক, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
বাস সার্ভিসের লাইনম্যান মো. জাকির হোসেন জানান, ব্যবসায়ীদের কাঠ লোড-আনলোড অন্যত্র সরিয়ে নিতে অনুরোধ করলেও তারা পাত্তা দিচ্ছেন না। তাদের ট্রাকের চাপে পানির পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনও ঠিক হয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে সমবায় সমিতির সভাপতি মাসুদ রানা মাসুম বলেন, পাইপ চাপা পড়েছে ঠিকই, তবে পুরোপুরি নষ্ট হয়নি। সৃষ্ট গর্তগুলো ভরাট এবং বিকল্প রাস্তা তৈরির জন্য শ্রমিক ঠিক করা হয়েছে। তবে কাজ কবে সম্পন্ন হবে সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, গাছের ডিপোর অনুমোদনের বিষয়টি বন বিভাগের দায়িত্ব। টার্মিনালের পাশে কাঠ রাখার বিষয়টি তিনি এখনো দেখেননি, তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রুমা রেঞ্জার অসীম বারেক জানান, কাঠ সরানোর জন্য সময় প্রয়োজন। আগামী রোববার (৫ অক্টোবর) এর মধ্যে কাঠ সরানো না হলে অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ‘অন্য ব্যবস্থা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা তিনি বিস্তারিত জানাননি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে রুমা বাস টার্মিনালের জনস্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
What's Your Reaction?






