গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই : ফয়জুল করীম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, "২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে অনেক শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছে,পঙ্গুত্ব বরন করেছে এমনকি সর্বস্ব হারিয়েছে শুরু মাএ এই দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করার জন্য,ক্ষমতার লোভী গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে একনায়কতন্ত্র স্বৈরাচারী সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য,একটি সুন্দর শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার জন্য। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশে প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতি কালো টাকার দৌরাত্ম্য, পেশিশক্তি এবং ভোট জালিয়াতির সুযোগ করে দেয়, যা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার এবং চাঁদাবাজির জন্ম দেয়। তাই এই নির্বাচন পদ্ধতি আর বাংলার জমিনে এদেশের জনগণ দেখতে চায় না। প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতি বাতিল করে পিআর পদ্ধতিতে নতুন বাংলাদেশের নির্বাচন চায়। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিতে হবে। পিআর পদ্ধতির পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি চালু হলে একটি সুষম সংসদ তৈরি হবে, বিশ্বের ৯১টি দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে এবং কোনো দেশই এটিকে বাতিল করেনি বরং নতুন করে আরও দেশ এই পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে।"
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে পিরোজপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ইসলামী আন্দোলনের পিরোজপুর জেলা শাখা-এর উদ্যোগে "পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি প্রদান, অপরাধী ও খুনিদের দৃশ্যমান বিচারের দাবীতে" গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া হাওলাদারের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মাদ মনিরুল হাসানের সঞ্চালনায় তিনি আরো বলেন, "দেশের সিংহভাগ রাজনৈতিক দলই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চায়, কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এর বিরোধিতা করছে। তাই সরকারের প্রতি গণভোটের আহ্বান জানাচ্ছি, জনগণের কাছে মত জানতে চাওয়া হোক-তারা কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) পরিচালিত এক জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,দেখা গেছে, ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছেন।"
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কয়েকটি মৌলিক দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, "নির্বাচন ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের দৃশ্যমান বিচার করতে হবে। সব শেষে একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।"
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, "২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের মানুষ একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। স্বাধীনতা পরবর্তী যারাই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল, তারা জনগণকে চরমভাবে হতাশ করেছে। নতুন বাংলাদেশে যেনো কোন নির্বাচিত স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও সন্ত্রাসী শ্রেনী রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে ধ্বংস করতে না পারে এবং একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক রাষ্ট্রসংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তরুণ প্রজন্মের প্রতিটি ভোটের মূল্যায়ন, ফ্যাসিজমের পূণরাবৃত্তি রোধ এবং জাতীয় সরকার গঠনে সংসদের প্রস্তাবিত উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে।তাই স্বাধীনতাকামী,মুক্তিকামী মানুষকে ইসলামের পতাকা তলে সমবেত হতে হবে। মানব রচিত মতবাদের মাধ্যমে এই স্বপ্নপূরণ সম্ভব নয়। একজন সচেতন মুসলমান ইসলামকে উপেক্ষা করে মানব রচিত কোন মতবাদে বিশ্বাসী হতেপারেনা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে আমি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।"
গণ সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন, ইসলামী আন্দোলনের পিরোজপুর জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল আহসান, ইসলামী যুবি আন্দোলন, পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ সাইদুল ইসলাম, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ ও আইম্মা পরিষদ, পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি, মুহাম্মাদ তরিকুল ইসলাম, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ পিরোজপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ নাঈমুল ইসলাম সহ জেলা ও থানা নেতৃবৃন্দ।
What's Your Reaction?






