সারাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ: ৫ দফা দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের ডাকে ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, দিনাজপুর এবং পিরোজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত এসব বিক্ষোভ থেকে সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয় এবং দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
ফরিদপুর শহরে জেলা জামায়াতের উদ্যোগে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল পৌনে পাঁচটায় ভাঙ্গা রোড মোড় থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে জনতা ব্যাংক মোড়ে একটি পথসভায় মিলিত হয়। সভায় জেলা আমির মাওলানা বদরুদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা সেক্রেটারি আব্দুল ওহাবসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
একই দিনে জেলার সালথা, সদরপুর এবং আলফাডাঙ্গা উপজেলায়ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। সালথায় উপজেলা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা আবুল ফজল মুরাদ। সদরপুরে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন যৌথভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। আলফাডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে ফরিদপুর-১ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক ড. ইলিয়াস মোল্লা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি তার বক্তব্যে "জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনই জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ" বলে উল্লেখ করেন।
ফরিদপুর ছাড়াও মুন্সীগঞ্জ, দিনাজপুর এবং পিরোজপুরেও ব্যাপক বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান, লৌহজং এবং শ্রীনগরে দিনব্যাপী পৃথক পৃথক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে এবং পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতেও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একই দাবিতে রাস্তায় নামেন। এই সমাবেশগুলোতে বক্তারা বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থার সমালোচনা করে বলেন, এই পদ্ধতিতে অধিকাংশ ভোটারের মতামতের প্রতিফলন ঘটছে না। তাই অবিলম্বে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু করার জোর দাবি জানান তারা।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সরকারের কাছে মোট পাঁচটি প্রধান দাবি তুলে ধরা হয়েছে:
১. জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান।
২. জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু করা।
৩. সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন।
৪. ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলের সকল জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার নিশ্চিত করা।
৫. জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
বক্তারা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন, যদি তাদের এই পাঁচ দফা দাবি মেনে না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সকল স্থানেই মিছিল ও সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
What's Your Reaction?






