বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও বকেয়া বেতনের দাবিতে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক অবরোধ

মোঃ শামীম আহমেদ, স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকাঃ
Sep 24, 2025 - 17:08
 0  6
বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও বকেয়া বেতনের দাবিতে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক অবরোধ

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া এবং বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে নাসা গ্রুপের শ্রমিকরা বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধের ফলে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়, যা সাধারণ যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে ফেলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করে প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা পর শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৮টার দিকে নিশিন্তপুরের নাসা গ্রুপের কয়েক হাজার শ্রমিক তাঁদের কারখানা খুলে দেওয়া এবং আগস্ট মাসের বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের দাবিতে বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের দাবিতে অনড় থেকে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হতে বাধ্য হয়। সকাল সোয়া ১০টার দিকে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, "আমাদের আগস্ট মাসের বেতনসহ সমস্ত পাওনাদি পরিশোধ করে অবিলম্বে কারখানা খুলে দিতে হবে।" তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, যদি তাদের দাবি পূরণ না করা হয়, তবে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন।

এই ঘটনার পেছনের অনুসন্ধানে জানা যায়, নাসা গ্রুপের আর্থিক সংকট বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল, যা গ্রুপটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার গ্রেপ্তারের পর থেকে আরও প্রকট হয়। এর আগে, শ্রমিকদের অসন্তোষ নিরসনে গত ১০ সেপ্টেম্বর সাভার গলফ ক্লাবে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে নাসা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন সম্পদ বিক্রি করে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তার আগেই মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক ত্রিপক্ষীয় সভায় বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকট ও ক্রয়াদেশ না থাকার কারণ দেখিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং নভেম্বরের মধ্যে সকল পাওনা পরিশোধের কথা জানানো হয়, যা শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।

এ বিষয়ে শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, শ্রমিকরা সকালে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করলে যানজটের সৃষ্টি হয়। তিনি জানান, "বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য আমরা কাজ করছি।"

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow