ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ, সাংবাদিক দেখে পালালেন

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাপলেজা ইউনিয়নে কর্মরত ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা (সহকারী তহসিলদার) তিমির কান্তি হালদারের বিরুদ্ধে জমি নামজারিসহ বিভিন্ন সেবায় ঘুষ গ্রহণ ও নানা অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, আর্থিক লেনদেন ছাড়া কোনো কাজই করেন না এই কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রতিবেদন তৈরি করায় অসংখ্য সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। নামজারির জন্য সরকারিভাবে নির্ধারিত ফি ১১৭০ টাকা হলেও, তিনি প্রতিটি আবেদন থেকে ৭ হাজার টাকা বা তারও বেশি আদায় করছেন। ভুক্তভোগীরা আরও জানান, অফিসে "নামজারি মঞ্জুর হলে ১১০০ টাকা অনলাইনে পরিশোধ করুন" লেখা সাইনবোর্ডটি এখন শুধুমাত্র লোক দেখানো বিষয়ে পরিণত হয়েছে। হয়রানির ভয়ে অনেকে ক্যামেরার সামনে কথা বলতেও সাহস পাচ্ছেন না। গ্রামের সহজ-সরল মানুষেরা জানান, তারা সরকারি ফি সম্পর্কে অবগত না থাকায় ৭ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। টাকা না দিলে কাগজে জটিলতা তৈরি করা হবে, এই ভয়েই তারা ঘুষ দিচ্ছেন।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিকরা সরেজমিনে সাপলেজা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে এক নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিমির কান্তি হালদার তাদের বসিয়ে রেখেই হঠাৎ করে অফিস থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র মিস্ত্রী জানান, তিমির কান্তি হালদার তাকে কিছু না জানিয়েই অফিস ত্যাগ করেছেন। তার ধারণা, সাংবাদিকদের দেখেই তিনি পালিয়ে গেছেন।
মঠবাড়িয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাইসুল ইসলাম জানান, তিমির কান্তি হালদারের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। পূর্বের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার দুটি বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) বাতিল এবং পদোন্নতি স্থগিত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক অভিযোগগুলোর তদন্ত করেও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
What's Your Reaction?






