সিংগারবিলে গ্রাম পুলিশ নার্গিস ও স্বামীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিংগারবিল ইউনিয়নে কর্মরত গ্রাম পুলিশ মোছাঃ নার্গিস বেগম ও তার স্বামী মোঃ শফিক মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। দ্বিতীয় পর্বের এই ধারাবাহিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মোছাঃ নার্গিস বেগম ও তার স্বামী ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নানা অজুহাতে অর্থ আদায় করছেন। ইউনিয়নের দুই শতাধিক ভুক্তভোগীর দাবি—গর্ভবতী ভাতা, মৃত্যু সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা, টিসিবি কার্ডসহ বিভিন্ন সরকারি সেবার আশ্বাস দিয়ে তারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কেউ কেউ সরকারি টিউবওয়েল বা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়ার আশায় তাদের হাতে অর্থ দিয়েছেন, কিন্তু পরে কোনো সেবা পাননি।
অভিযোগকারীদের একাধিকজন জানান, টাকা ফেরত চাইলে নার্গিস বেগম ও তার স্বামী হুমকি দেন এবং প্রশাসনিক প্রভাব খাটানোর ভয় দেখান। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোছাঃ সুফিয়া বেগমও তাদের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, নার্গিস বেগম নিজের প্রভাব খাটিয়ে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের চারটি ঘর নিজের দখলে রেখেছেন। ইউনিয়নের অন্যান্য গ্রাম পুলিশ সদস্যরাও তার আচরণে অতিষ্ঠ। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন বলেও জানা গেছে।
এ বিষয়ে সিংগারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, “আমরা আজকে ইউনিয়নের সব মেম্বারদের নিয়ে বিষয়টি আলোচনা করেছি। অপরাধী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সচিবকে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয় বিএনপি সভাপতি মোঃ রেহান উদ্দিন ভূঁইয়াও জানিয়েছেন, বহু নারী-পুরুষ তার কাছে এসে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি যখন নার্গিস বেগম ও তার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করেন, তখন শফিক মিয়া উল্টো ভুক্তভোগীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, “লিখিত অভিযোগ ও সরাসরি বক্তব্য থাকার পরও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অপরাধীদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এভাবে ইউনিয়ন পরিষদ চলতে পারে না। প্রশাসনের কাছে আমরা দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি।”
স্থানীয়দের দাবি, “গ্রাম পুলিশ নার্গিস বেগম ও তার স্বামীর অনিয়ম-দুর্নীতির বিচার হলে সাধারণ মানুষ হয়রানি থেকে মুক্তি পাবে।”
What's Your Reaction?
মোঃ শামীম মিয়া , বিজয়নগর প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়ীয়াঃ