লিফটের অজুহাতে চালু হচ্ছে না ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল

মোঃ নাজমুল হোসেন,জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুরঃ
Aug 16, 2025 - 18:40
 0  1
লিফটের অজুহাতে চালু হচ্ছে না ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল

প্রায় এক বছর আগে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ শেষ হলেও লিফট ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার অজুহাতে চালু হয়নি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল। ফলে নতুন ভবনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে আর জেলার কয়েক লাখ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে।

বর্তমানে পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ভবনে পরিচালিত হলেও প্রতিদিন ভর্তি রোগীর সংখ্যা থাকে তার দ্বিগুণেরও বেশি। জায়গার অভাবে অনেক রোগীকে বারান্দা বা মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আবার শয্যা সংকট ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে অনেককেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল, খুলনা কিংবা ঢাকায় রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে ভোগান্তির পাশাপাশি রোগীদের চিকিৎসা খরচও বেড়ে যাচ্ছে।

পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৪ সালে, মাত্র ৩১ শয্যা নিয়ে। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে এটি ৫০ শয্যা এবং ২০০৫ সালে ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসক সংকট, বারবার বদলি ও পরিকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে মানসম্মত সেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। সেই সীমাবদ্ধতা কাটাতে ২০১৭ সালে ২৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হলেও কেবল লিফট ও বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় এখনো তা চালু হয়নি।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ওমর আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ভালো চিকিৎসার আশায় আসি, কিন্তু জায়গা নেই। এখানে ডাক্তারও কম, যন্ত্রপাতিও আধুনিক নয়। বাধ্য হয়ে খুলনা বা ঢাকায় যেতে হয়। এতে সময়, কষ্ট আর খরচ—সবকিছুই বেড়ে যায়।”
ভর্তি হওয়া রোগী তাসলিমা আক্তার (৫০) জানান, “বেড না পেয়ে বারান্দায় শুয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আগের চেয়ে আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। আমরা চাই দ্রুত নতুন ভবন চালু হোক।”

পিরোজপুর গণপূর্ত বিভাগের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী ফাহিম আহমেদ বলেন, “ভবনের মূল নির্মাণ শেষ। লিফট ও বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ চলমান। শিগগিরই হস্তান্তর সম্ভব হবে।”

পিরোজপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. মতিউর জানান, “পুরাতন ভবনে সীমিত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। নতুন ভবন চালু হলে আরও উন্নত ও সুশৃঙ্খল সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow