ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড সাঈদখালী আশ্রয়ণ প্রকল্প, ১৮০টি ঘরের অর্ধেকই বসবাসের অনুপযোগী

মোঃ নাজমুল হোসেন,জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুরঃ
Jun 11, 2025 - 22:35
 0  2
ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড সাঈদখালী আশ্রয়ণ প্রকল্প, ১৮০টি ঘরের অর্ধেকই বসবাসের অনুপযোগী

ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার সাঈদখালী চরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো। কোথাও দেখা যায় দাঁড়িয়ে থাকা কেবল কংক্রিটের খুঁটি, কোথাও আবার পড়ে আছে টিনের চালার ধ্বংসাবশেষ। কোনো কোনো বাসিন্দা কোনোমতে পলিথিন দিয়ে ঘর ঢেকে বসবাস করছেন, আবার অনেকেই সেই সুযোগও না পেয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ২০০৬ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গৃহহীনদের জন্য সাঈদখালী চরে নির্মাণ করে ১৮০টি ঘর। কিন্তু ২০০৭ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’-এ সেগুলোর অধিকাংশই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকটি বড় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় ঘরগুলোর অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রায় ৮০টি পরিবার বাধ্য হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

ঘরগুলোর বাসিন্দারা জানান, তারা মূলত মৎস্যজীবী ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। এনজিওর ঋণ ও অভাব-অনটনে জর্জরিত এসব মানুষ ঘরের মেরামত তো দূরের কথা, দৈনন্দিন জীবন চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে ঘরগুলো আর বসবাসের উপযোগী নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, “শুকনো মৌসুমে কোনোমতে থাকলেও বর্ষায় থাকা একপ্রকার অসম্ভব। ঘরে পানি পড়ে, ছাউনি উড়ে যায়। পলিথিন দিয়েই কোনোমতে টিকে থাকি।” তিনি সরকারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে ঘর সংস্কারের দাবি জানান।

ইন্দুরকানী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাসুদ সাঈদী বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এই প্রকল্প অবহেলিত। সাঈদখালী চরের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলোর কোনো মেরামত হয়নি। দ্রুত সংস্কার না হলে পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে যাবে এবং ভুমি দস্যুরা এসব সরকারি জমি বেদখল করে নেবে।” তিনি জানান, ইতোমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উন্নয়ন শাখায় ঘর মেরামতের আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান-বিন-মুহাম্মাদ আলী বলেন, “ঘরগুলোর অবস্থা অত্যন্ত করুণ। পুনঃনির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow