খানাখন্দে ভরা পিরোজপুর-বরিশাল মহাসড়ক: সংস্কারের নামে দুর্নীতি, জনদুর্ভোগ চরমে
পিরোজপুর-বরিশাল মহাসড়কের পিরোজপুর অংশে প্রায় ১৩ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশার কারণে যান চলাচলে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। শিয়ালকাঠি চৌরাস্তা থেকে পিরোজপুর বলেশ্বর ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটি অসংখ্য খানাখন্দে ভরে গেছে, যা সামান্য বৃষ্টিতেই ডোবায় পরিণত হচ্ছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, আর স্থায়ী সমাধানের অভাবে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার পিচ ও খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে এসব গর্তে পানি জমে থাকায় চালকরা এর গভীরতা বুঝতে না পেরে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। গর্তে গাড়ির চাকা পড়লে যানবাহন একদিকে কাত হয়ে উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। এই ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন শত শত বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে, যা প্রায়ই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অভিযোগ, সড়ক সংস্কারের নামে বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি ও অর্থ লোপাট চলছে। তাদের মতে, বিভিন্ন সময়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে খানাখন্দ ভরাট করা হলেও তা অল্প দিনেই আগের অবস্থায় ফিরে আসে। এতে সরকারি অর্থের অপচয় হলেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমে না। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার যানবাহনগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গর্তে পড়ে গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হওয়া এবং চাকা পাংচার হয়ে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন মালিকরা।
একজন পরিবহন শ্রমিক বলেন, "গর্তের মধ্যে গাড়ি পড়লে মনে হয় এখনই উল্টে যাবে। এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর কতদিন চলব? আমরা অস্থায়ী মেরামত চাই না, একটি মজবুত ও টেকসই রাস্তা চাই।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ জানান, "সড়কটির বেহাল দশার বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট গর্তগুলোতে পানি জমায় আমরা সাময়িকভাবে মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই স্থায়ীভাবে সড়কটি সংস্কার করা সম্ভব হবে।"
ভুক্তভোগী জনগণ ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা অস্থায়ী মেরামত নয়, বরং এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির জন্য একটি স্থায়ী, মজবুত ও টেকসই সমাধান চান। তাদের দাবি, দ্রুত বরাদ্দ নিশ্চিত করে মানসম্মত নির্মাণ কাজের মাধ্যমে এই দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটানো হোক।
What's Your Reaction?






