একটি ছবিতেই ভেঙে গেল স্বপ্ন, কেড়ে নিল প্রাণ

একটি ছবিতেই ভেঙে গেল স্বপ্ন, কেড়ে নিল এক সম্ভাবনাময় তরুণীর প্রাণ। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর পাত্রপক্ষের কাছে পাঠানো টপস-টিশার্ট পরা একটি ছবির কারণে ভেঙে যায় সম্পর্ক। সেই অপমান আর কষ্ট সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন কলেজছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী (১৮)। পিরোজপুরের নেছারাবাদের আউরিয়া গ্রামে ঘটে যাওয়া এই হৃদয়বিদারক ঘটনা পুরো এলাকায় শোকের ছায়া ফেলেছে।
ঐশী উপজেলার আউরিয়া গ্রামের নার্সারি ব্যবসায়ী মোঃ জাহিদ হোসেনের মেয়ে। তিনি এ বছরই অকলম মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে মাত্রই কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন। নতুন এক জীবন শুরুর আগেই সব শেষ হয়ে গেল। শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতেই গলায় ফাঁস দিয়ে জীবনের ইতি টানেন এই তরুণী।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক মাস আগে ঐশীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল এবং বিয়ের দিনক্ষণও চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু বিয়ের ঠিক আগে অজ্ঞাত কেউ মেসেঞ্জারের মাধ্যমে পাত্রপক্ষের কাছে ঐশীর টপস ও টি-শার্ট পরা কিছু ছবি পাঠিয়ে দেয়, যা নিয়েই শুরু হয় টানাপোড়েন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিহতের বাবা মো. জাহিদ হোসেন বলেন, "আমার মেয়ের বিয়েটা প্রায় ঠিকই ছিল। কিন্তু কে বা কারা এই ছবিগুলো পাঠিয়ে সব নষ্ট করে দিল। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির পর ছেলের পক্ষ থেকে বিয়েটা ভেঙে দেওয়া হয়। আমার মেয়ে এই অপমানটা সহ্য করতে পারেনি।" তিনি আরও জানান, আত্মহত্যার কিছুক্ষণ আগেও মেয়ে স্থানীয় দোকান থেকে মোবাইলের এমবি কার্ড কিনেছিল। বাসায় এসে ফোনে কারও সঙ্গে কান্নাকাটি করছিল, কিন্তু আমরা বুঝতেও পারিনি এত বড় সর্বনাশ হয়ে যাবে।
খবর পেয়ে দ্রুত তাকে নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিমা আক্তার জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মেয়েটি মারা যায়।
নেছারাবাদ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাধেশ্যাম সরকার জানিয়েছেন, খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর মর্গে পাঠানো হবে।
What's Your Reaction?






