সাভারে চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসে জড়িত বিএনপি নেতা মুশা বহিষ্কার, স্বস্তিতে এলাকাবাসী

সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোশারফ হোসেন মুশাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলীয় আদর্শ পরিপন্থি, শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও একাধিক চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসী অভিযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় বিএনপির মিডিয়া সেলে পাঠানো একটি সংশোধিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। দলটির সহ-দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়— দলের গঠনতন্ত্র ও আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় মোশারফ হোসেন মুশাকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বহিষ্কৃত মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একাধিক চাঁদাবাজি, সহিংসতা ও দখলবাজির অভিযোগ রয়েছে। এমনকি এক ব্যবসায়ীকে চাঁদা না দেওয়ায় তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করায় তাকে গ্রেপ্তার করেছিলো গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বিএনপি হাইকমান্ড সূত্রে আরও জানা যায়, ৫ আগস্টের পর থেকে মোশারফ মুশা বিএনপির ব্যানার ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন। এর আগেও তিনি ১০ বছর ধরে আওয়ামী লীগপন্থী পরিচয়ে চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন। তবে সরকার পতনের পর হঠাৎ করে তিনি ও তার ভাইয়েরা বিএনপিতে যোগ দেন এবং নতুন করে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নেন।
বহিষ্কারের ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মোশারফ ও তার ভাইয়েরা সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম-চাঁদাবাজি চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তাদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
হেমায়েতপুর, জয়ানাবাড়ি, যাদুরচর, হরিণধরা এলাকাগুলোর বাসিন্দারা জানান— মোশারফ ও তার বাহিনী গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা, ডিশ-ইন্টারনেট সংযোগ, ফুটপাত, স্কুল-মার্কেট এমনকি আবাসিক এলাকার ময়লা ফেলার জায়গাও দখলে নিয়েছে। এক ডিশ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করে জানান, “মোশারফ আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়েছে এবং আমার ব্যবসা দখল করতে চায়।”
আরেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, “প্রতিদিন তার লোকজন ফুটপাত থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা তোলে।”
ভুক্তভোগী সেন্টমার্টিন পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আরিফ জানান, “গত ৫ তারিখে আওয়ামী লীগের পতনের পর মোশারফ বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। একটি অসহায় পরিবারকে লুট করতে গেলে বাধা দিলে হকিস্টিক দিয়ে আমার বাঁ হাত তিন জায়গায় ভেঙে দেয়।”
প্রতিনিয়ত চাঁদা না দেওয়ায় নিরীহ মানুষ মারধরের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। কোথাও নিজে, আবার কোথাও ভাড়াটে বাহিনী পাঠিয়ে তিনি এসব তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা মোশারফ মুশা ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
What's Your Reaction?






