রাজশাহীতে গরুরহাট নিয়ে উত্তেজনা, দুই পক্ষের ইজারাদার মুখোমুখি

রাজশাহীতে সিটি করপোরেশনের সিটিহাট ও পবা উপজেলা প্রশাসনের অধীন দামকুড়া পশুহাটকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ইজারাদারদের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। এর জেরে গরুবাহী যানবাহন আটকে রাখা, গরু জোর করে নির্দিষ্ট হাটে নেওয়া, চালক ও ব্যবসায়ীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে চালু হওয়া দামকুড়া পশুহাট দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এ বছর ফের চালু হয়েছে। ২০০৫ সালে চালু হওয়া সিটিহাট চালু হওয়ার পর একটি প্রভাবশালী মহল উভয় হাটের ইজারা নিয়ে দামকুড়া হাট বন্ধ রেখেছিল। দীর্ঘ ১৯ বছর পর দুই হাট আলাদা দুই পক্ষের ইজারায় গেলে শুরু হয় উত্তেজনা।
সিটিহাটের ইজারা নিয়েছেন শওকত আলী ও তার অংশীদাররা, আর দামকুড়া হাটের ইজারা নিয়েছেন শাহ্ জাহান আলী। উভয় হাট বসে রোববার ও বুধবার।
দামকুড়া হাটের ইজারাদার শাহ্ জাহান আলীর অভিযোগ, সিটিহাটের পক্ষের লোকজন অন্তত ১০টি স্থানে গরুবাহী নসিমন-করিমন থামিয়ে জোরপূর্বক গরু সিটিহাটে নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি ২৯ এপ্রিল বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গরু ব্যবসায়ী কামাল জানান, “আমরা সিটিহাটে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কেউ গরুর গাড়ি আটকে দিয়ে দামকুড়ায় যেতে বাধ্য করেছে। নতুন হাট সম্পর্কে ভালোভাবে জানি না, তাই সিদ্ধান্ত নিতে সময় চাই।”
অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও একই অভিযোগ করেছেন। কেউ কেউ জানান, প্রতি গরু ৪০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে সিটিহাটে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
রবিবার সকালেও মহাসড়কের বিভিন্ন মোড়ে দুই পক্ষের লোকজন অবস্থান নেয়। পরে দামকুড়া থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে যানবাহনকে গন্তব্য অনুযায়ী যেতে বললে বেশিরভাগ গাড়ি সিটিহাটের দিকেই চলে যায়।
দামকুড়া হাটের ইজারাদার শাহ্ জাহান পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তার অভিযোগ, “পুলিশ সিটিহাটের পক্ষ নিচ্ছে এবং আমাদের হাটে গরু যেতে দিচ্ছে না।”
তবে দামকুড়া থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “দুই পক্ষের মধ্যে হালকা উত্তেজনা ছিল। আমরা উপস্থিত থেকে ব্যবসায়ীদের পছন্দ অনুযায়ী গন্তব্যে যেতে বলেছি।”
দুপুরে দামকুড়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাট প্রায় ফাঁকা। গরু কম, ক্রেতাও নেই। গোদাগাড়ীর ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বলেন, “সকালে গরু তুলে এখনও গাড়িতে বসে আছি। জোর করে এখানে আনা হয়েছে, কিন্তু এখানে তো কোনো ক্রেতা নেই।”
What's Your Reaction?






