নারী শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব: বেরোবির ইন্সট্রাক্টর রহমত আলী চাকরিচ্যুত

‘তোমার প্রতি আমার প্রবল আকর্ষণ’— বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ছাত্রীকে লেখা ইন্সট্রাক্টর ও সাবেক সমন্বয়ককে শেষ পর্যন্ত চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চাকরিচ্যুত রহমত আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কিক স্কলারশিপ প্রোগ্রামের কোর্স ইন্সট্রাক্টর এবং কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। নারী শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপের প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সংস্থার জরুরি বৈঠকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
উপাচার্য বলেন, নারী শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থা তদন্ত চালায়। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যেহেতু নিয়োগ ও বেতন সংস্থার অধীনে, তাই তারা শিগগিরই নতুন ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দেবে।
১৯ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রহমতের একাধিক কুরুচিপূর্ণ বার্তার স্ক্রিনশট ফাঁস হয়। সেখানে এক নারী শিক্ষার্থীকে উদ্দেশ করে তিনি লিখেন— ‘তোমার প্রতি আমার প্রবল আকর্ষণ, আই নিড ইউ, আমি সত্যিই তোমাকে কামনা করি, আমার সঙ্গে থাকবে তো?’
ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্রী ছাড়াও পরিসংখ্যান বিভাগের আরও এক শিক্ষার্থী এবং রংপুর শহরের কয়েকজন তরুণী রহমতের বিরুদ্ধে অনৈতিক আচরণের অভিযোগ করেছেন। তারা সাংবাদিকদের হাতে স্ক্রিনশটও দিয়েছেন।
এছাড়া রহমতের নিজ জেলা গাইবান্ধার এক শিক্ষার্থী, যিনি বর্তমানে ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়ছেন, তিনিও রহমতের সঙ্গে হওয়া কথোপকথনের স্ক্রিনশট প্রকাশ করেছেন। সেখানে রহমতকে শোনা যায়— ‘কলিজা, কলিজা, প্লিজ ডোন্ট ডু দ্যাট…’
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, কোর্স ইন্সট্রাক্টর হলেও রহমত আলী নিয়মিত ক্লাস নিতেন না। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি বেশি সময় ব্যয় করতেন। তার কোর্সের শিক্ষার্থী রাসেল বলেন, স্যার চাইলে ক্লাস নিতেন, নইলে মাসের পর মাস দেখা যেত না।
বিষয়টি লজ্জাজনক উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, এমন ঘৃণিত কাজের কোনো স্থান বেরোবিতে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে হাইকোর্ট অনুমোদিত যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেল আছে। সেখানে অভিযোগ এলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন— দীর্ঘদিন ধরেই নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িত রহমত আলীর মুখোশ অবশেষে উন্মোচিত হলো।
অভিযোগের বিষয়ে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও রহমত আলী কল রিসিভ করেননি।
What's Your Reaction?






