নওগাঁয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন

নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধে আব্দুস সালাম (৪৫) নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে রবিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুস সালাম নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতেই উপস্থিত ছিলেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী তার পরিবারের সাথে পত্নীতলা উপজেলায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতো। তাদের পাশের বাসাতেই ভাড়া থাকতো ভাঙারি ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম। মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে সালাম প্রায়ই ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করত এবং বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দিত। ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেলে ওই শিক্ষার্থী একটি বাজার এলাকায় গেলে সালাম তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে। এরপর নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিণপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় আটকে রেখে দিনের পর দিন তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।
ঘটনার পর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে র্যাব-৫ এর একটি দল অভিযানে নামে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তারা ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং ধর্ষক আব্দুস সালামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
তদন্ত শেষে পুলিশ সালামসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত দীর্ঘ শুনানি ও ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে শুধুমাত্র আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এই সাজা প্রদান করে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম বলেন, "এই রায়ের মাধ্যমে ভুক্তভোগী পরিবারটি ন্যায়বিচার পেয়েছে এবং সমাজে অপরাধীদের জন্য একটি কঠোর বার্তা পৌঁছে গেছে।" তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম জানান, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
What's Your Reaction?






