থানা থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতার আত্মসমর্পণ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানা থেকে পালিয়ে যাওয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাসিরউদ্দিন (৫২) পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল সাড়ে আটটার দিকে তিনি একটি মাইক্রোবাসে করে থানায় প্রবেশ করেন। এ সময় তার সাথে তার এক বোন উপস্থিত ছিলেন।
নাসিরউদ্দিন থানা থেকে পালানোর পর পুলিশ তার বড় ভাই নবাব আলীকে থানায় নিয়ে আসে। নবাব আলী পৌর এলাকার বাকাইল মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। এ ছাড়া পুলিশ আলফাডাঙ্গা পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাকাইল মহল্লায় অবস্থিত নাসিরউদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার ছেলে শাহরিয়ারকে আটক করে। তবে শাহরিয়ার চলমান এসএসসি পরীক্ষার পরীক্ষার্থী হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হরুন অর রশিদ দাবি করেন, নাসিরউদ্দিন আত্মসমর্পণ করেননি; বরং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে থানায় আনা হয়েছে। তাকে বিস্ফোরক কিংবা অন্য কোনো আইনে গ্রেফতার দেখানো হবে কি না, তা জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ওসি আরও জানান, নাসিরউদ্দিনের ভাই নবাব আলী বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। তাকেও ছেড়ে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
নাসিরউদ্দিনের ছোট ভাই তৈয়বুর রহমান জানান, তার ভাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বেচ্ছায় থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনি বলেন, থানা থেকে পালানোর পর পরিবার থেকে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়, কিন্তু তার ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। পরে আজ ভোরে তার অবস্থান শনাক্ত হওয়ার পর পরিবারিক সিদ্ধান্তে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। তিনি আরও জানান, নাসিরউদ্দিন কোনো মামলার আসামি নন, তাই পালিয়ে থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
মো. নাসিরউদ্দিন আলফাডাঙ্গা পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাকাইল মহল্লার বাসিন্দা ও মৃত সালাম মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসার সাথেও জড়িত।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার বাকাইল সড়কে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নাসিরউদ্দিনকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে দুপুর দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে তিনি মুঠোফোনে কথা বলার সময় থানার পেছনের দিকে পুলিশ মেসের পাশ দিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর পুলিশ তার ভাই নবাব আলীকে থানায় নিয়ে আসে এবং পরিবারের সদস্যদের ফোনে জানায়—নাসিরউদ্দিনকে হাজির করলে নবাব আলীকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
What's Your Reaction?






