বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু, বাবা গুরুতর আহত

পিরোজপুরের নেছারাবাদে (স্বরূপকাঠি) বাঁশবাগানে লাগা আগুন নেভাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. রনি (২৬) নামে এক যুবকের করুণ মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় তার বাবা মো. হারুন-অর-রশিদ (৫০) গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামে এই হৃদয় বিদারক দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত রনি পেশায় একজন রেন্ট-এ-কার চালক ছিলেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতের চাচাতো ভাই মো. রাজু জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে রনি ও তার পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান যে তাদের বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় তারা দ্রুত নেছারাবাদ বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করেন, কিন্তু কেউ ফোন রিসিভ করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। আশেপাশের আরও কয়েকজন ফোন দিয়েও বিদ্যুৎ অফিসের কোনো সাড়া পাননি।
এর কিছুক্ষণ পর এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে রনি ও তার বাবা হারুন আগুন নেভানোর জন্য জ্বলন্ত বাঁশ কাটার উদ্যোগ নেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, বাঁশ কাটার সময়ই হঠাৎ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়ে যায়। এতে বাবা-ছেলে দুজনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। বাবা হারুন-অর-রশিদ ছিটকে পড়ে গেলেও প্রাণে বেঁচে যান, কিন্তু ছেলে রনি বিদ্যুতায়িত বাঁশ ধরে থাকায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
পরে প্রতিবেশীরা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রনিকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক লিমা আক্তার বলেন, "রনিকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল।"
এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) চন্দ্রশেখর গাইন বলেন, "আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে তাদের বাঁশ কাটতে যাওয়াটা ঠিক হয়নি। হতে পারে অন্য কোনো গ্রাহকের অনুরোধে শাটডাউন দেওয়া হয়েছিল এবং কাজ শেষে লাইনটি পুনরায় চালু করা হয়। ওই গ্রামের কেউ সরাসরি আমাদের সঙ্গে কথা বলেননি।"
খবর পেয়ে নেছারাবাদ থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বনি আমিন জানিয়েছেন, "আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
What's Your Reaction?






