রাবি শিক্ষকদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য: ছাত্রদল নেতার প্রশংসাপত্র ও চারিত্রিক সনদ বাতিল

মো: গোলাম কিবরিয়া , জেলা প্রতিনিধি, রাজশাহী
Oct 1, 2025 - 12:48
 0  5
রাবি শিক্ষকদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য: ছাত্রদল নেতার প্রশংসাপত্র ও চারিত্রিক সনদ বাতিল

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমানের প্রশংসাপত্র ও চারিত্রিক সনদপত্র বাতিল করেছে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি। একই সঙ্গে তাকে বিভাগে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বুলবুল রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী এবং বর্তমান ছাত্রদল রাবি শাখার সহ-সভাপতি।

সূত্র জানায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে বুলবুল রহমান তার ফেসবুক আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীবসহ উর্দু বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম এবং সহকারী প্রক্টর প্রফেসর ড. নাসির উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ও কটূক্তিমূলক মন্তব্য করেন। বিষয়টি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পাসে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরবর্তীতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সভায় সর্বসম্মতভাবে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।

একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বুলবুল রহমানকে উর্দু বিভাগ থেকে স্থায়ীভাবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় এবং তার প্রশংসাপত্র, চারিত্রিক সনদ ও ভবিষ্যতে বিভাগীয় যেকোনো প্রত্যয়নপত্র বাতিল করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

জানা গেছে, সম্প্রতি উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে বুলবুল রহমান যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও আবেদন করেন। শর্ত অনুযায়ী ন্যূনতম ৩.৫০ সিজিপিএ প্রয়োজন থাকলেও তার অনার্সে ছিল ৩.৩৫। আবেদন বাতিল হওয়ায় তিনি ক্ষোভে শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ, হুমকি-ধামকি এবং পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবমাননাকর পোস্ট দেন। এর আগে গত ১১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভা চলাকালে উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে তিনি ব্যাপক সমালোচিত হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত বুলবুল রহমান বলেন, “চারিত্রিক সনদ বাতিলের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাকে এ বিষয়ে ডাকা হয়নি, কোনো সিদ্ধান্তও জানানো হয়নি। তবে আমি পোস্ট দিয়েছি, কারণ শিক্ষকরা আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে কম মার্কস দিয়েছেন।”

অন্যদিকে উর্দু বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষকদের নিয়ে এ ধরনের বাজে মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে তিনি শিক্ষকদের ‘কুকুরের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা চরম অবমাননাকর। আমরা প্রশাসনের কাছে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow