নওগাঁয় ডাকাতের উপদ্রব বৃদ্ধি, জনমনে আতঙ্ক

নওগাঁর পোরশা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি ডাকাতির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় প্রতি রাতেই উপজেলার কোনো না কোনো স্থানে হানা দিচ্ছে ডাকাত দল। এসব ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডাকাতরা মূলত রাতের বেলায় প্রধান সড়কগুলোতে গাছ ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এরপর অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান সবকিছু লুট করে নিয়ে যায়। শুধু সড়কেই নয়, বিভিন্ন বাজার ও মোড়ের দোকানপাটও তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। দুর্বৃত্তরা দোকানের তালা ভেঙে মালামাল লুট করছে এবং রাতে বাড়ি ফেরার পথে ব্যবসায়ীরাও প্রায়ই আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) গভীর রাতে সারাইগাছী-আড্ডা আঞ্চলিক মহাসড়কের মোশানতলা মোড় থেকে বন্ধুপাড়া মোড় পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকায় তিনটি ভিন্ন স্থানে গাছ ফেলে ডাকাতি করা হয়। এ সময় একাধিক যানবাহনের যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে নেয় ডাকাতরা। একই রাতে বেজোড়া মোড় এলাকায় তিনজন নিরাপত্তাকর্মীকে জিম্মি করে প্রায় ১৮টি দোকানের মালামাল লুটে নেওয়া হয়।
এর আগে, গত রোববার সন্ধ্যায় একই সড়কের মোশানতলা মোড়ে একই পদ্ধতিতে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায় ডাকাতরা। সেদিনের ঘটনায় ডাকাতদের হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হন, যারা বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মোশানতলা মোড়ে ডাকাতির ঘটনা বারবার ঘটলেও পুলিশের ভূমিকা হতাশাজনক। ঘটনার সময় পুলিশ মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে সারাইগাছী বাজারে অবস্থান করলেও তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায় না। ডাকাতি শেষে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে বলে অভিযোগ করেন তারা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার এবং পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ওসি মিন্টু রহমান জানান, সাম্প্রতিক কালের ডাকাতির ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, ডাকাতি প্রতিরোধে বিশেষ টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দেন, জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
What's Your Reaction?






