জামায়াতে ইসলামী সিলেকশন নয়, ইলেকশন চায়

"আমরা সিলেকশন নয়, ইলেকশন চাই এবং কোনো সিলেকশন মেনেও নেব না"—এই কঠোর হুঁশিয়ারি এবং সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনায় বুধবার উত্তাল হয়ে উঠল রাজধানীর বিজয়নগর। জুলাই ঘোষণা ও সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান এবং সেই আলোকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী (উত্তর ও দক্ষিণ) শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, "এই সরকারের উচিত ছিল আগে নিজেরা যেই চেয়ারে বসেছে, সেই চেয়ারগুলো ধুয়েমুছে পবিত্র করা। কারণ তারা সংস্কারহীন অপবিত্র চেয়ারে বসে নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে।"
তিনি বলেন, "জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর জাতি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু সংস্কারের নামে মাসের পর মাস রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে নিয়ে সরকার এখন বলছে সংস্কারের আইনি ভিত্তি দেওয়া যাবে না—এটা জাতির সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।"
দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় উল্লেখ করে ডা. তাহের বলেন, "সুজন-এর জরিপেই উঠে এসেছে দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতি চায়। কিন্তু একটি মাত্র দল দাবি করে তারা পিআর বোঝে না। আমি বলি, আপনারা রিকশাচালক, ভ্যানচালকের কাছ থেকে পিআর বুঝে নিন। আসলে তারাও পিআর বোঝে, কিন্তু মানতে চায় না। কারণ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ভোট চুরি করতে পারবে না, ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।"
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, "স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ঘোষণা দিলেও বাস্তবে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। পরিবেশ থাকলে একটি দলের উপদেষ্টা বলতে পারতেন না, ‘দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে জীবন নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারবে না’! প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার পরও তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো না? স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কার পক্ষে কাজ করছেন, তা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে।"
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রমুখ। সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল গণভোটের মাধ্যমে জুলাই ঘোষণাপত্রের আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে বিজয়নগর থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর হাজারো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
What's Your Reaction?






