নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের ৬ মাসব্যাপী ক্রাশ প্রোগ্রাম সম্পন্ন

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ছয় মাসব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’-এর আওতায় জমাকৃত সকল আবেদন নিষ্পন্ন করা হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. বুলবুল আহমেদ।
তিনি জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র এখন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিভিন্ন নাগরিক সেবা গ্রহণে এনআইডি কার্ড বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ায় অনেকেই তাদের এনআইডি তথ্য সংশোধনের প্রয়োজন অনুভব করেন। অনেক সময় জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের সঙ্গে অন্যান্য দলিলাদির মিল না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা পেতে জটিলতা দেখা দেয়। এ কারণে নাগরিকরা সংশোধনের জন্য আবেদন করে থাকেন। এসব আবেদন অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নিষ্পত্তি করা গেলেও, কিছু জটিল আবেদন দীর্ঘদিন ধরে অনিষ্পন্ন অবস্থায় থেকে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে এসব ঝুলে থাকা আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশব্যাপী জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের বিশেষ ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। এ কর্মসূচির আওতায় বেগমগঞ্জ উপজেলায় মোট ৩,০৭৭টি আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। উপযুক্ত দলিলাদি না থাকায় বাতিল করা হয়েছে ৩৬৯টি আবেদন। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ভোটার স্থানান্তর করা হয়েছে ২,৯৩৯ জনের। হারানো বা নষ্ট কার্ড নতুন করে ইস্যু করা হয়েছে ১,৫৪৭ জনকে এবং ছবি বা আঙ্গুলের ছাপ সংশোধন করা হয়েছে ১,৫৭৮টি।
এছাড়া জেলা নির্বাচন অফিস, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস (কুমিল্লা) এবং মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত জটিল আবেদনগুলোর মধ্যে ৭৬৯টির সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এসব জটিল আবেদনগুলোর অনেকগুলোই গত তিন-চার বছর ধরে নিষ্পত্তিহীন অবস্থায় ছিল। একইসাথে, এই সময়ে নতুন ভোটার নিবন্ধনের কাজও চলমান ছিল এবং শুধুমাত্র অফিসে এসে ২,৭৫১ জন নাগরিক নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন সাধারণত চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। ‘ক’ শ্রেণির আবেদন উপজেলা পর্যায়ে নিষ্পত্তিযোগ্য, যেখানে ৩ বছরের মধ্যে বয়স বা নামের সামান্য পরিবর্তন থাকে। ‘খ’ শ্রেণির আবেদন জেলা পর্যায়ে নিষ্পত্তি হয়, যেখানে বয়স ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত বা আংশিক নাম পরিবর্তন থাকে। ‘গ’ ও ‘ঘ’ শ্রেণির আবেদনগুলো জটিল প্রকৃতির হওয়ায় আঞ্চলিক অফিস ও মহাপরিচালকের কার্যালয়ে নিষ্পত্তি হয়। এসব জটিল আবেদনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট দলিলাদি এবং মাঠপর্যায়ে তদন্তের প্রয়োজন হয়, যা উপজেলা নির্বাচন অফিসাররা সরেজমিনে গিয়ে করেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. বুলবুল আহমেদ অনুরোধ জানান, সংশোধনের জন্য কেউ যেন কোনো দালালের মাধ্যমে আবেদন না করে, বরং সরাসরি উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসে সেবা গ্রহণ করে। এতে সঠিকভাবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
What's Your Reaction?






