মুন্সিগঞ্জে মাদ্রাসা পরিচালককে মারধর

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে একটি মহিলা মাদ্রাসার পরিচালক ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরিচালকের পরিবারের পক্ষ থেকে পূর্ব শত্রুতা ও চাঁদা না দেওয়ায় হামলা, মারধর এবং লুটপাটের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করা হয়েছে। তবে স্থানীয় ও পুলিশের ভাষ্যমতে, ছাত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টার অভিযোগে গণপিটুনির শিকার হন ওই পরিচালক। এই ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
বুধবার উপজেলার রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের বালাশুর এলাকায় জামিয়া উম্মুল ক্বোরা মহিলা মাদ্রাসায় এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
আদালতে দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি তকিউর রহমানের স্ত্রী তানজিলা আক্তার বাদী হয়ে আলী হোসেন ও রোকনকে প্রধান আসামি করে ২৫ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছেন।
মামলার বিবরণে তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে এবং হুমকি-ধামকি দিতে থাকে।
বুধবার সন্ধ্যায় অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাদ্রাসায় হামলা চালায়। তারা সিসি ক্যামেরা ও দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তকিউর রহমানের বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং দুই শিশু সন্তানের ওপর হামলা করে। তানজিলার অভিযোগ, হামলাকারীরা তাকে ও তার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে এবং তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। এসময় হামলাকারীরা ঘর থেকে স্বর্ণালংকার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লুট করে এবং আসবাবপত্র ভাঙচুর করে চলে যায়।
তবে এই ঘটনার পেছনে ভিন্ন এক চিত্র তুলে ধরেছেন স্থানীয়রা। তাদের মতে, মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি তকিউর রহমান তার এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ জনতা মাদ্রাসায় চড়াও হয় এবং তকিউর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে।
পরবর্তীতে, যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রীর অভিভাবক বাদী হয়ে মুফতি তকিউরের বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে শ্রীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা জানান, ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলার ভিত্তিতে অভিযুক্ত মাদ্রাসা পরিচালক মুফতি তকিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
What's Your Reaction?






