৩ দিন পর বন্ধ হলো বাঁধের সবকটি জলকপাট, বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের উদ্বেগ কাটিয়ে অবশেষে স্বস্তি ফিরেছে রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে। কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর বিপৎসীমার নিচে নেমে আসায় টানা ৭২ ঘণ্টা খোলা রাখার পর শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেল ৫টায় বাঁধের ১৬টি জলকপাটই বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে কর্ণফুলী নদীর ভাটি অঞ্চলের প্লাবন পরিস্থিতি উন্নতির আশা করা হচ্ছে।
এর আগে, টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাইয়ের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত বুধবার (২০ আগস্ট) রাত ৮টায় দ্বিতীয় দফায় বাঁধের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছিল। এসময় কর্ণফুলী নদীতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়, যা ভাটি অঞ্চলে সাময়িক বন্যার সৃষ্টি করে।
জলকপাট বন্ধ হলেও কাপ্তাই হ্রদের ভরা যৌবন এখন আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে। বর্তমানে হ্রদে ১০৮.১৫ ফুট মিনস সি লেভেল (এমএসএল) পানি রয়েছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত অনুকূল। এই সুযোগে কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের সবগুলোই এখন একযোগে সচল রাখা হয়েছে। এতে প্রতিদিন ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এ বিষয়ে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক, প্রকৌশলী মাহামুদ হাসান জানান, "বৃষ্টিপাত কমে আসায় হ্রদের পানির স্তর স্থিতিশীল রয়েছে। তাই আমরা জলকপাটগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব ইউনিট চালু থাকায় টারবাইনের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি স্বাভাবিকভাবেই নদীতে যাচ্ছে।"
তিনি আরও যোগ করেন, "আমরা পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। যদি আবারও ভারি বর্ষণে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পায়, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় পুনরায় জলকপাট খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে হ্রদের পানি বাড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জলকপাট খোলা হয়।
What's Your Reaction?






