আশুগঞ্জে দুই দফা দাবিতে সার কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ

বেতন বৈষম্য নিরসন ও কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড। 'এক কর্পোরেশন, এক স্কেল' বাস্তবায়ন এবং কারখানার উৎপাদন চালুর দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীরা বিক্ষোভ সমাবেশ, গেট মিটিং ও মিছিল করেছেন। দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
রবিবার (১০ আগস্ট) সকাল ৯টায় কারখানার প্রধান ফটকের সামনে এএফসিসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) অধীনে থাকা দেশের অন্যতম বৃহৎ এই সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি কর্তৃপক্ষের বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার চিত্র তুলে ধরেন।
শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করেন, একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য দ্বৈত বেতন কাঠামো চালু রাখা হয়েছে, যা চরম বৈষম্যমূলক। কারখানার চালিকাশক্তি অপারেটর ও টেকনিশিয়ানদের মজুরি স্কেলে বেতন দেওয়া হলেও অন্যান্য শ্রমিকরা পে-কমিশনের আওতায় বেতন পাচ্ছেন। এই বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না উল্লেখ করে বক্তারা অবিলম্বে মজুরি স্কেল বিলুপ্ত করে সকল টেকনিশিয়ান ও অপারেটরদের জাতীয় বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। একইসাথে, পে-কমিশনভুক্ত শ্রমিকদের মতো জাতীয় মজুরি কমিশনভুক্তদের জন্যও ১৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দ্রুত কার্যকরের দাবি তোলেন তারা।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, দেশের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখা সত্ত্বেও গ্যাস সংকটের অজুহাতে বছরের বেশিরভাগ সময় কারখানাটি বন্ধ রাখা হয়। এতে শুধু উৎপাদনই ব্যাহত হচ্ছে না, বরং ইউরিয়া সারের চাহিদা মেটাতে দেশকে আমদানি নির্ভর হতে হচ্ছে। বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার এই কারখানার গ্যাস সংযোগ বন্ধ রেখে বিদেশ থেকে উচ্চমূল্যে সার আমদানি করেছে। এখন কারখানাটি ধ্বংসের পথে।"
তারা উদাহরণ টেনে বলেন, "আশুগঞ্জ কারখানার সাথে একই সময়ে মিশরে স্থাপিত দুটি কারখানা তাদের উৎপাদন ১৬০০ মেট্রিক টন থেকে বাড়িয়ে ২২০০ মেট্রিক টনে উন্নীত করেছে। অথচ শুধুমাত্র গ্যাস সংযোগের অভাবে আমাদের কারখানাটি বন্ধ হয়ে আছে।"
এএফসিসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি বজলুর রশিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু কাউসার, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আক্তার হোসেন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কারখানা চত্বর প্রদক্ষিণ করে এবং শ্রমিক নেতারা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে তাদের দাবিসম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
What's Your Reaction?






