সীমান্তে বর্ণাঢ্য রথযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ওয়াগ্যেয়াই পোয়ে উৎসব সম্পন্ন

বান্দরবানের থানচি উপজেলার মায়ানমার সীমান্তবর্তী বড় মদক এলাকায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দঘন পরিবেশে সাঙ্গু নদীতে রথ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ওয়াগ্যেয়াই পোয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটেছে। বুধবার, ০৮ অক্টোবর, বড় মদক কেন্দ্রীয় উৎসব উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত চার দিনব্যাপী এই বর্ণিল উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়।
সমাপনী দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকাল তিনটায় সাঙ্গু নদীর তীরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট উবাথোয়াই মারমা। উৎসবের উদ্বোধন করেন বড় মদক বিজিবি ক্যাম্পের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন সাবির হোসেন।
উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি উসাইসে মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা, উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াংচিং মারমা, রেমাক্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা, যুব সমাজের প্রতিনিধি নুমংপ্রু মারমা, বিএনপি নেতা উবামং মারমা এবং সাচিংপ্রু কারবারীসহ বড় মদক অঞ্চলের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় রাজবংশী ময়ূরের আদলে নির্মিত সুসজ্জিত রথে বুদ্ধের মূর্তি স্থাপন করে পঞ্চশীল গ্রহণ ও হাজারো বাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর কলাগাছের ভেলায় বাঁধা রথের দড়ি ধরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে টানতে থাকেন তরুণ-তরুণীরা। এসময় সাঙ্গু নদীর দুই তীরে সমবেত হাজারো নর-নারী মঙ্গল কামনায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে প্রার্থনা করেন। ঢাকঢোলের বাজনার তালে তালে তরুণ-তরুণীদের সম্মিলিত নাচ-গানে পুরো এলাকা আনন্দমুখর হয়ে ওঠে।
এই ঐতিহ্যবাহী রথ বিসর্জন অনুষ্ঠানে মারমা সম্প্রদায়ের পাশাপাশি পাহাড়ি-বাঙালিসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন, যা এই উৎসবকে এক সর্বজনীন মিলনমেলায় পরিণত করে।
রাত ৯টার দিকে 'তরুগু' নামক নদীর গভীরতম স্থানে হাজারো প্রদীপ প্রজ্জ্বলন শেষে রথটি বিসর্জন দেওয়া হয়। রথ বিসর্জনের পর রাতব্যাপী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন হাজারো দর্শক।
What's Your Reaction?






