মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নাহিদ ইসলামের দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
Sep 18, 2025 - 12:52
 0  1
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নাহিদ ইসলামের দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও অপর একজনের বিরুদ্ধে তিনি তার জবানবন্দি পেশ করেন।

বেলা ১১টার পর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে এদিন শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। এর আগে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নাহিদ ইসলামের আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল, যা শেষ না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কার্যক্রম মুলতবি রাখেন। আজকের কার্যক্রমের শুরুতেই নাহিদ ইসলাম তার অবশিষ্ট বক্তব্য তুলে ধরেন। তার জবানবন্দি শেষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাকে জেরা করবেন।

সাক্ষ্যে নাহিদ ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের 'রাজাকারের বাচ্চা' ও 'রাজাকারের নাতিপুতি' বলে আখ্যায়িত করে কোটাপ্রথার পক্ষে অবস্থান নেন। নাহিদের মতে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণের বৈধতা দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার এই মন্তব্যে সারাদেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানিত বোধ করে এবং ওই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদ শুরু হয়।

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক জানান, ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আন্দোলন ঠেকাতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। এর পরদিন, ১৬ জুলাই দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয় এবং সেদিন পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদসহ দেশজুড়ে আরও ছয়জন নিহত হন।

নাহিদ ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে জানান, ১৭ জুলাই ডিজিএফআই তাদের ওপর কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। ওইদিন রাতেই দেশব্যাপী 'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর ফলস্বরূপ ১৮ জুলাই সারা দেশে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসে। তিনি বলেন, সে সময় আন্দোলনের নেতাদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে এবং গ্রেপ্তার এড়াতে তারা আত্মগোপনে চলে যান। ওই দিন সারাদেশে বহু ছাত্র-জনতা হতাহত হয় এবং রাতে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯ জুলাইও পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের কর্মীরা আন্দোলনরতদের ওপর গুলি চালালে বহু মানুষ হতাহত হন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। এই মামলার অভিযোগপত্রটি মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার, যেখানে ৮১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow