শঙ্খধ্বনি আর চণ্ডীপাঠে মুখরিত ভোর, মহালয়ায় মাগুরায় দেবীবরণ

বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠ, শঙ্খের মঙ্গলধ্বনি আর পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ - এই চিরচেনা সুরেই রবিবার ঘুম ভাঙল মাগুরার। পিতৃপক্ষের অবসান এবং দেবীপক্ষের সূচনার এই পুণ্য লগ্নে মাগুরাবাসী মেতে উঠল দেবী দুর্গার আবাহনে। মহালয়ার ভোরে জেলার প্রতিটি মণ্ডপ থেকে ভেসে আসা আগমনীর সুরে শুরু হলো শারদীয় দুর্গোৎসবের চূড়ান্ত ক্ষণগণনা।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে মাগুরার বিভিন্ন মণ্ডপে মহালয়ার পুণ্যতিথি পালিত হয়। একদিকে যেমন পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় তর্পণ করা হয়, তেমনি অন্যদিকে দুর্গতিনাশিনী দেবীকে মর্ত্যলোকে বরণ করে নেওয়া হয়। শহরের অন্যতম প্রধান আয়োজন ছিল নিতাই গৌর গোপাল সেবাশ্রমে। সেখানে “পিতৃভ্যঃ স্বধা স্বাহা, পিতৃভ্যঃ পুণ্যাহ স্বধা স্বাহা” - এই পবিত্র মন্ত্রে মুখরিত পরিবেশে ভক্তরা পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন।
সনাতন ধর্মানুসারে, মহালয়াই হলো দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক সূচনা। এই দিনে ভক্তরা ফুল, ফল, বেলপাতা ও পবিত্র জল দিয়ে দেবীকে মর্ত্যলোকে স্বাগত জানান।
নিতাই গৌর গোপাল সেবাশ্রম ছাড়াও শহরের ছানা বাবুর বটতলা, নতুন বাজার স্মৃতি সংঘ, জামরুলতলা পূজামণ্ডপ ও সাতদোহা লেংটা বাবার সেবাশ্রমসহ জেলার বিভিন্ন মণ্ডপে একই ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে মহালয়া উদযাপিত হয়।
এ প্রসঙ্গে নিতাই গৌর গোপাল সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ চিন্ময় আনন্দ দাস বাবাজি (চঞ্চল গোসাই) বলেন, “মহালয়ার এই পবিত্র দিনে আমরা একদিকে দেবী দুর্গাকে আবাহন করি, অন্যদিকে পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় তর্পণ করে থাকি। এটি মূলত মর্ত্যলোকে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক সূচনা।”
শাস্ত্র মতে, এ বছর দেবী দুর্গা আসছেন গজে (হাতি) চড়ে এবং গমন করবেন দোলায়। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবীর এই আগমন ও প্রস্থান জগৎজুড়ে শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গলের বার্তা বয়ে আনবে।
What's Your Reaction?






