নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগে ভেঙে ফেলা হলো সেতু

জালিস মাহমুদ, স্টাফ রিপোর্টার, পিরোজপুরঃ
Jul 24, 2025 - 00:16
 0  2
নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগে ভেঙে ফেলা হলো সেতু

নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা এবং সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করায় পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার একটি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সেটিকে ভেঙে ফেলতে হয়েছে।

উপজেলার পূর্ব জলাবাড়ি ইউনিয়নের ভাদুরা খালের উপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে ফেলছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। তবে এলজিইডি কাজ শুরু করার আগেই মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করেই ধসে পড়ে।

পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি)  উপজেলার পূর্ব জলাবাড়ি খ্রিস্টানপাড়া হতে মাদ্রাবাজার সড়কের ওপর একটি প্যাকেজে ২২ ও ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুইটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২৯  ডিসেম্বর মেসার্স ইফতি ইটিসিএলকে কার্যাদেশ দেয় পিরোজপুর এলজিইডি। যার চুক্তি মূল্য ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ব্রিজ দুইটি নির্মাণ কাজ শেষ হ‌ওয়ার কথা ছিল।

তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিরাজুল ইসলাম নিজে কাজ না করে একজন সাব কন্ট্রাক্টরকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিলেন। তবে  নিম্নমানের কাজ এবং সিডিউল অনুযায়ী না করার কারনে স্থানীয়রা এ কাজে বাঁধা দেন। 

পরবর্তীতে অন্য একজন সাব কন্ট্রাক্টর গত বছরের শেষ দিকে গার্ডার ছাড়াই সেতুটির ছাদ ঢালাই দেয়। তবে এর কিছুদিন পরে ঢালাই দেওয়া অংশে ত্রুটি দেখা দেয়। তখন স্থানীয়দের আপত্তির মুখে এলজিইডি তদন্ত করে সেতুটির ঢালাই দেওয়া অংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই অনুযায়ী গত সোমবার সেতুটির ত্রুটিপূর্ণ অংশটির অপসারণ শুরু করে।

স্থানীয় বাসিন্দা দিপু মিস্ত্রী বলেন, এই সেতুটি গত চার বছর ধরে দফায় দফায় খুবই ধীরগতিতে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হচ্ছিলো। সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার হয়ে আসছে। সিডিউল অনুযায়ী উপকরন না ব্যবহার করায় সেতুটির স্লাব ফেটে যায়। পরে কাজটি ফেলে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা হয়ে যান। কিছুদিন আগে গণমাধ্যমে অনিয়মের খবর প্রকাশিত হলে ঠিকাদারের লোকজন সংস্কার করতে আসে। সংস্কার শুরুর পূর্বেই সেতুটি ধসে খালের মধ্য পড়ে যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং এলজিইডির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সেতু নির্মাণে অকল্পনীয় দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে।

এ বিষয় উপজেলা প্রকৌশলী মো. রায়সুল ইসলাম জানান, কাজ নিয়ম অনুযায়ী না করার কারণে পুরো স্লাব (ছাদ) ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণ কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মূল ঠিকাদারকে যোগাযোগ করতে না পারায় কাজটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। 

উল্লেখ্য, পিরোজপুর এলজিইডি থেকে কাজ না করেই কয়েক হাজার কোটি আত্মসাৎ করে মিরাজুল ইসলাম এবং তার সহযোগীরা। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছে মিরাজুল।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow