হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণে চাপ বাড়লেও ‘অস্ত্র ত্যাগ নয়’ - নাঈম কাসেম

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
Jul 7, 2025 - 13:03
 0  1
হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণে চাপ বাড়লেও ‘অস্ত্র ত্যাগ নয়’ - নাঈম কাসেম

লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে হিজবুল্লাহ তাদের অস্ত্র হস্তান্তর করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সংগঠনটির প্রধান নাঈম কাসেম। রবিবার (৬ জুলাই) বৈরুতে আশুরা উপলক্ষে হাজারো সমর্থকের সামনে দেয়া এক ভাষণে তিনি এই অবস্থান জানান।

কাসেম বলেন, “ইসরায়েলের হুমকি আমাদের আত্মসমর্পণ করাবে না। আমরা আমাদের অস্ত্র ছাড়বো না, যতক্ষণ না আগ্রাসন বন্ধ হয় এবং বন্দিরা মুক্তি পায়।” তিনি স্পষ্ট করে দেন, যুদ্ধবিরতির পূর্বশর্তগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।

এই অবস্থান এমন এক সময়ে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত থমাস ব্যারাক সোমবার (৭ জুলাই) বৈরুত সফর করছেন এবং হিজবুল্লাহকে বছরের শেষ নাগাদ নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য চাপ বাড়ছে।

গত বছর ইসরায়েলের সঙ্গে হিজবুল্লাহর সংঘাতের পর গঠিত লেবাননের নতুন সরকার বারবার বলে আসছে, কেবলমাত্র রাষ্ট্রের হাতেই অস্ত্র থাকবে। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে হিজবুল্লাহকে সীমান্ত এলাকা থেকে লিতানি নদীর উত্তরে সরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে ইসরায়েল এখনো পাঁচটি কৌশলগত স্থানে সেনা মোতায়েন রেখেছে।

কাসেম বলেন, “যদি ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির শর্ত মানে, দখলদারিত্ব থেকে সরে যায়, আগ্রাসন বন্ধ করে ও লেবাননের পুনর্গঠন শুরু করে, তাহলে আমরা জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কৌশল নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারি। তখন নিরস্ত্রীকরণের প্রশ্নটি আলোচনায় আসতে পারে।”

রবিবার আশুরা উপলক্ষে হিজবুল্লাহর হাজার হাজার সমর্থক কালো পোশাকে শহরের রাস্তায় মিছিল করেন। তাদের হাতে ছিল লেবানন, ফিলিস্তিন, হিজবুল্লাহ ও ইরানের পতাকা। মিছিলে নিহত নেতা হাসান নাসরুল্লাহর ছবিও বহন করা হয়।

দক্ষিণ লেবাননের এক বাসিন্দা হুসেইন জাবের বলেন, “এই অস্ত্র হস্তান্তর করা যাবে না, এখন নয়, ভবিষ্যতেও নয়। যারা ভাবে হিজবুল্লাহ অস্ত্র ত্যাগ করবে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।”

সম্প্রতি ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সাআর সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ইঙ্গিত দিলেও কাসেম তার ভাষণে বলেন, “আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ কখনোই মেনে নেব না।”

মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে শিয়া মুসলমানদের জন্য আশুরা ছিল গুরুত্বপূর্ণ দিন। ইরাকের পবিত্র শহর নাজাফ ও কারবালায় লাখো মানুষ জড়ো হলেও, দক্ষিণ লেবাননের নাবাতিয়েহ শহরে এবার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। এক স্থানীয় বাসিন্দা আলি মাজরানি জানান, ইসরায়েলি হামলা ও বাজার ধ্বংসের কারণে মানুষের আগ্রহ কমে গেছে।

এদিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দক্ষিণে সাইয়্যিদা জয়নাব দরগায় শত শত শিয়া মুসল্লি আশুরা পালন করেছেন। তবে নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে ইরান, ইরাক বা লেবানন থেকে এবার কোনো তীর্থযাত্রী আসেননি বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow