লিবিয়ায় মানব পাচারের জালে বাংলাদেশিরা — প্রায়শই এমন অভিযানে ধরা পড়ে চক্র

লিবিয়ায় মানব পাচার ও অবৈধ অভিবাসনের সঙ্গে বাংলাদেশি চক্র জড়িত থাকার ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। বিভিন্ন সময় লিবিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী এ ধরনের চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে মানব পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করছে। কখনো সাগরপথে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার সময়, কখনো অপহরণ বা মুক্তিপণের ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশিরা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হচ্ছেন। আর এসব ঘটনার নেপথ্যে থাকছে একাংশ বাংলাদেশি নাগরিক, যারা মানব পাচারকারীদের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
সম্প্রতি বেঙ্গাজি উপকণ্ঠের নাওয়াকিয়া এলাকায় মানব পাচার চক্রের বিরুদ্ধে একটি অভিযান চালায় লিবিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানে উদ্ধার করা হয় নগদ অর্থ, আগ্নেয়াস্ত্র, মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি। অভিযুক্তরা হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ব্ল্যাকমেইল করত এবং মুক্তিপণ আদায় করত বলে ধারণা করছে নিরাপত্তা বাহিনী।
অভিযানের সময় অমানবিক পরিবেশে আটক কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিককেও উদ্ধার করা হয়। তদন্তের ভিত্তিতে পরে অন্য এলাকায়ও অভিযান চালিয়ে আরও কিছু পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিরাপত্তা সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই ধরনের অপরাধীদের ধরতে নিয়মিত অভিযান চলছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
লিবিয়া সরকার মানব পাচার ও অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতিতে রয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার পাশাপাশি মানবাধিকার সুরক্ষায় এসব চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ থেকে মানব পাচারের বড় অংশ যায় লিবিয়ায়। এখান থেকেই ইউরোপে প্রবেশের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। তবে অনেক সময়ই এই যাত্রা শেষ হয় পাচারকারীদের হাতে প্রতারণা, জিম্মি অবস্থা বা মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে।
বিশেষজ্ঞরা আরও সতর্ক করে বলেন, বিদেশে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের অবৈধ পথে না গিয়ে বৈধপথে যাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অন্যথায় জীবনের পাশাপাশি সম্মানও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
নানা অভিযানের পরও লিবিয়ায় বাংলাদেশিদের জড়িত মানব পাচার চক্র বন্ধ হচ্ছে না। কখনো ধরা পড়ে, আবার গা ঢাকা দেয়। ফলে মানব পাচারের ভয়াবহতা এখানকার বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে।
What's Your Reaction?






