মাসুদ সাঈদীর জনপ্রিয়তায় পাল্টে যাচ্ছে নির্বাচনী সমীকরণ

পিরোজপুর-০১ (পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক তৎপরতা এখন তুঙ্গে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মাঠপর্যায়ে সংগঠনিক তৎপরতা জোরদার করেছে। এ আসনে ভোটের রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামি চিন্তাবিদ শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সেজ পুত্র মাসুদ সাঈদী।
২০১৪ সালের জিয়ানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাসুদ সাঈদী বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে রাজনীতির মাঠে সরব উপস্থিতি জানান দেন। তারপর থেকে জনগণের পাশে থাকা, উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, সৎ ও মানবিক আচরণের মাধ্যমে তিনি তৃণমূল মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো, মাদ্রাসা-স্কুলে ভবন নির্মাণ, কাঁচা রাস্তায় ইটসলিং, কালভার্ট নির্মাণ ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করাসহ উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে তার অবদান স্পষ্ট।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন তিনি। উপজেলায় তিনিই প্রথম এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫/জিপিএ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট ও মেডেল প্রদান শুরু করেন। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসাহ তৈরি হয়। রাজনৈতিক মামলা-হামলায় জর্জরিত দলের নেতাকর্মীদের পাশে তিনি যেমন দাঁড়িয়েছেন, তেমনি হাইকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছেন জামিনের জন্য। বহু পরিবারকে মাসিক বাজার পৌঁছে দিয়েছেন, খবর রেখেছেন অসহায়দের।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবেও মাসুদ সাঈদীর ভূমিকা প্রশংসনীয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উত্তেজনা প্রশমনে তিনি নিজে মাইকিং করে জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। দুর্গাপূজায় জামায়াত নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তিনি একটি ব্যতিক্রমধর্মী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের ভাষ্যে মাসুদ সাঈদী একজন সৎ, উদার, বৈষম্যহীন, জনগণের পাশে থাকা নেতৃত্বের প্রতীক। পত্তাশী ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম জানান, উন্নয়ন কাজের জন্য নেতার পিছনে ঘুরতে হয়নি, বরং তিনি নিজেই জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে এলাকা ঘুরে প্রয়োজন অনুযায়ী বরাদ্দ দিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বপন কুমার ডাকুয়া বলেন, অস্থির পরিস্থিতিতে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে মাসুদ সাঈদী যে ভূমিকা পালন করেছেন, তা এলাকার শান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
নাজিরপুরের শহীদ জিয়া কলেজের সহকারী প্রভাষক প্রদীপ হালদার বলেন, তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য কাজ করেন, এজন্য হিন্দু সমাজ তার পাশে রয়েছে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পিরোজপুর জেলা সভাপতি বাবুল হালদারও জানান, আল্লামা সাঈদী বা মাসুদ সাঈদী কখনোই হিন্দুদের ওপর কোনো জুলুম করেননি, বরং পাশে থেকেছেন।
বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, জনপ্রিয়তা, সততা ও যোগ্যতার কারণে পিরোজপুরবাসী এবার মাসুদ সাঈদীকেই মূল্যায়ন করবে। জামায়াতের পিরোজপুর জেলা আমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন ফরিদ বলেন, পিরোজপুর-১ আসনটি আল্লামা সাঈদীর জনপ্রিয়তাজনিত দূর্গে পরিণত হয়েছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় মাসুদ সাঈদী এখানে তুমুল জনপ্রিয়। আসন্ন নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে মাসুদ সাঈদীর বিজয় নিশ্চিত বলেই তিনি আশাবাদী।
সরেজমিনে পিরোজপুর-০১ আসন ঘুরে দেখা গেছে, মাসুদ সাঈদী ইতোমধ্যে ওয়ার্ড থেকে জেলা পর্যায়ে জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেছেন। নিয়মিত জনসংযোগ, মতবিনিময় ও গণমুখী সভার মাধ্যমে তিনি জনগণের মন জয় করে চলেছেন। ফলে রাজনীতির মাঠে প্রশ্ন উঠেছে—এই আসনে মাসুদ সাঈদীর সঙ্গে ভোটযুদ্ধে টিকে থাকা কি সম্ভব?
What's Your Reaction?






