মহুরী নদীর পানি বাড়ায় নোয়াখালীতে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা

টানা ভারি বর্ষণে জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন অঞ্চল। মহুরী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে মাইজদীসহ জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক ও পাড়া-মহল্লা পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (৯ জুলাই) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আরও ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। নদীবন্দরে ১ নম্বর এবং সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন জাহাঙ্গীর জানান, বৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতার কারণে সদর, সুবর্ণচর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুধবার ও বৃহস্পতিবারের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব মতে, একদিনে জেলার পানি বেড়েছে ১৭ সেন্টিমিটার। যদিও এখনও পানি বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে, তবুও টানা বৃষ্টিতে জেলার সদর, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর ও কবিরহাটে চরম জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
মাইজদী, ফকিরপুর, হরিনারায়ণপুর, লক্ষ্মীনারায়ণপুর, জেলখানা সড়ক, স্টেডিয়াম পাড়া ও হাউজিং এলাকায় হাঁটুপানিতে চলাচল করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। নিচতলা ও কাঁচা ঘরগুলোতে পানি ঢুকে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। শহরের অধিকাংশ সড়কে গর্ত তৈরি হয়ে গেছে, যা সৃষ্টি করেছে ‘মরণ ফাঁদ’।
কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌর এলাকায় করালিয়া, মওদুদ স্কুল, হাসপাতাল গেটসহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন। একই অবস্থা বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও সুবর্ণচরেও।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নালা-জলাশয় ভরাট এবং পৌরসভার অবহেলার কারণে নোয়াখালীতে একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানান, “আমি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি বৈঠক চলছে।”
স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি এলাকাবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সচেতনতার মাধ্যমেই দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব—এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।
What's Your Reaction?






