এইচএসসি এডমিটে ভয়াবহ ভুল, আশুলিয়ায় ২৮৬ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা অনিশ্চিত

“যে বিষয়ে ক্লাসই হয়নি, সেই বিষয়েই পরীক্ষার প্রবেশপত্র এসেছে। আমরা পরীক্ষার খাতায় লিখব কী?”—এই প্রশ্ন তুলে আশুলিয়ার ‘আশুলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ’-এর ২৮৬ জন শিক্ষার্থী বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার মাত্র একদিন আগে এমন বিভ্রাটে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। প্রবেশপত্রে ভয়াবহ ভুলের প্রতিবাদে তারা বুধবার (৯ জুলাই) সকালে কলেজ চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা কলেজে যে বিষয়গুলোতে নিয়মিত ক্লাস করেছে, সেই বিষয়গুলোর কোনো অনুমোদনই নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বরং প্রবেশপত্রে উঠে এসেছে পরিসংখ্যান, সমাজকর্ম ও ভূগোল—যা তাদের একেবারেই পড়ানো হয়নি। এতে তারা চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থীরা এ ভুলের জন্য কলেজের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারীর গাফিলতিকে দায়ী করে বলেন, “এই অবহেলার কারণে আমরা পরীক্ষায় বসতে পারছি না, যারা দায়ী তাদের শাস্তি চাই।”
সকাল ১১টার দিকে কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে সিএন্ডবি হয়ে বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা প্রবেশপত্র সংশোধন ও পরীক্ষা নিশ্চিত করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। দীর্ঘ সময় সড়ক অবরোধ থাকায় আশপাশের এলাকায় সৃষ্টি হয় যানজট। সাধারণ যাত্রীরা বৃষ্টির মধ্যে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি তোলে। দাবিগুলো হলো—প্রবেশপত্র সংশোধন করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের লিখিত নিশ্চয়তা দিতে হবে; আগামীকাল (১০ জুলাই) থেকে প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করতে হবে; যেসব শিক্ষক-কর্মচারী এই অবহেলার জন্য দায়ী, তাদের চাকরিচ্যুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে; এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গণসাক্ষরের মাধ্যমে গেট ব্লকড কর্মসূচি চালু করতে হবে।
সাধারণ পথচারী ও যাত্রীদের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভে ভোগান্তিতে পড়েছে বহু মানুষ। একজন যাত্রী বলেন, “বৃষ্টির মধ্যে আমাদের হাঁটতে হচ্ছে, গাড়ি চলছে না। তবে আমরা চাই শিক্ষার্থীদের এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক।” অনেকে শিক্ষার্থীদের দাবিকে যৌক্তিক উল্লেখ করলেও দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ না থাকলে সমস্যার বিস্তার ঘটবে বলেও মত দেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কিংবা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে পরীক্ষা বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
What's Your Reaction?






