লামায় আইনজীবীর প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে জমি দখলের চেষ্টা ও হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক পরিবার। শুক্রবার (৪ জুলাই) লামা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিন সহোদর অভিযোগ করেন, আইনজীবী ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়ে আরাফাত নামের এক ব্যক্তি তাদের ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন।
ভুক্তভোগী নাজমুল হাসান জানান, তাদের বাবা আনোয়ার হোসেন ও মা নুরজাহান বেগম ১৯৮০-৮১ সালে সরকারের কাছ থেকে ২৮৪নং ইয়াংছা মৌজায় আর/৩২৫ ও আর/৩১৪ হোল্ডিংয়ে মোট ১০ একর জমি বন্দোবস্ত পান। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তারা ওই জমিতে গাছের বাগান ও খামার ঘর তৈরি করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে ছিলেন। কিন্তু গেলো কোরবানির ঈদের সময় খামারবাড়িতে অনুপস্থিত থাকার সুযোগে গত ২ জুন গভীর রাতে আরাফাত ও তার ভাই লামা কোর্টের আইনজীবী জাফর আলম অজ্ঞাত বহিরাগতদের সহায়তায় খামারঘরটি ভেঙে ফেলেন এবং বাগানের অন্তত ২০-২৫টি গাছ কেটে নিয়ে যান।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ভাঙচুরের ঘটনার পর গত ২১ জুন আরাফাত সেখানে নতুন করে একটি খামারঘর নির্মাণ করেন। এরপর ২৫ জুন তিনি ৫ একর জমির বায়নানামা উপস্থাপন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। অথচ যেই হোল্ডিংয়ের ভিত্তিতে মামলা করা হয়েছে, তা ভুক্তভোগীদের জমির আশেপাশেও পড়ে না বলে দাবি করেন তারা।
ভুক্তভোগীরা আরো জানান, এরপর ১ জুলাই আইনজীবী জাফর আলম নতুন করে একটি মামলা দায়ের করেন নাজমুল হাসান, তার ভাই ও খামারের কর্মচারীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে। অথচ এরই মধ্যে নাজমুল হাসান নিজের জমি রক্ষায় একই দিন জাফর আলমদের বিরুদ্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি অভিযোগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হাসান বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আইনজীবী জাফর আলম তার প্রভাব খাটিয়ে আমাদের জমি আত্মসাতের চেষ্টা করছেন। আমরা পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
অন্যদিকে লামা কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মো. জাফর আলম মুঠোফোনে জানান, “ভাই হিসেবে আমি আইনি পরামর্শ দিতে পারি। তবে আমাকে ঘিরে সংবাদ সম্মেলনে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মানহানিকর। জমির মালিকানা কাগজপত্র, সার্ভেয়ার ও সরকারি তদন্তেই প্রমাণ হবে।”
এ বিষয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
What's Your Reaction?






