কাপ্তাইয়ে ম্যালেরিয়ার চোখ রাঙ্গানি — আক্রান্ত শতাধিক

রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। গত বছর যেখানে ৩৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, চলতি বর্ষা মৌসুমে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় তিনগুণে। কাপ্তাই, চিৎমরম ও চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের দুর্গম গ্রামগুলোতে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ম্যালেরিয়া।
বিশেষ করে ভাঙ্গামুড়া, বড়পাড়া, শুভধন কার্বারী পাড়া, মেম্বার পাড়া, বেচারান কার্বারী পাড়া, আড়াছড়ি পাড়া ও চন্দ্রঘোনা এলাকায় প্রতিটি পরিবারেই দুই একজন করে জ্বর ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
দুর্গমতার কারণে অনেকেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না গিয়ে স্থানীয় বাজার থেকে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, এসব এলাকায় ম্যালেরিয়ার পাশাপাশি ডায়রিয়ার প্রকোপও দেখা দিয়েছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে কথা হয় স্বাস্থ্য সহকারী আসমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি জানান, গত ১৫ দিনে শিশুসহ ১৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল, যারা বর্তমানে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আক্রান্তদের বেশিরভাগই শিশু ও কিশোর।
কাপ্তাই ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, ব্র্যাক তিন বছর অন্তর বিনামূল্যে মশারি বিতরণ করে থাকে। তবে ২০২৪ সালে মশারি বিতরণ না হলেও ২০২৫ সালে ছয় মাস পনের দিনে প্রায় চার হাজার মশারি বিতরণ করা হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, রাতে মশারি ব্যবহার করলেও দিনে জুমের মাঠে কাজ করার সময় মশার কামড় থেকে রেহাই নেই। তখনই মূলত তারা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন।
কাপ্তাই ব্লাড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, হরিণছড়া থেকে এক অসচ্ছল ম্যালেরিয়া রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে রক্ত সংগ্রহসহ চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রুইহ্লা অং মারমা বলেন, বর্ষা মৌসুমে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়, তবে নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করে তিনি জানান, বাড়ির আশপাশে পানি জমিয়ে রাখা যাবে না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এবং সবসময় মশারি ব্যবহার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্ষা শেষে আরও বৃষ্টিপাত হলে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়তে পারে।
What's Your Reaction?






