টিসিবির পণ্য বিতরণে নেই তদারকি, হয়রানির শিকার নারী-শিশুরা

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা পৌরসভায় টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রমে তদারকির অভাব ও সমন্বয়হীনতার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন নারী, বৃদ্ধ ও শিশুসহ সাধারণ উপকারভোগীরা।
আজ মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে সরেজমিনে টিসিবি পণ্য বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শনকালে দেখা যায়, সকাল সাড়ে সাতটা থেকে কার্ডধারীরা পণ্য সংগ্রহে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকে সুশৃঙ্খল লাইনে থাকলেও, কেউ কেউ এলোমেলোভাবে অবস্থান করছেন। ভিড়ের মধ্যে কান্নাকাটি করছে ছোট শিশুরা, অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বৃদ্ধ নারীরা।
জিয়ানগর, নবীনগর ও দক্ষিণ মুসলিমপাড়া থেকে আসা ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই এসে কার্ড জমা দিলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কেউ কেউ গতকাল এসে পণ্য না পেয়ে আজ আবার এসেছেন, যার ফলে একই পণ্য নিতে তাঁদের অতিরিক্ত ভাড়া ও সময় ব্যয় করতে হচ্ছে।
ইসলাম নগর থেকে আসা বৃদ্ধা শামসুন্নাহার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গতকাল ১২০ টাকা খরচ করে এসেও মাল পাইনি। আজ আবার একই খরচ করে এসে ৫৫০ টাকার মাল নিয়েছি। যোগফলে আমারই লোকসান।”
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, পণ্য বিতরণ কার্যক্রমে গতি নেই, ওয়ার্ডভিত্তিক আলাদা বুথ না থাকায় সবাই একদিনে এসে ভিড় করেন, ফলে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা ও ভোগান্তি।
পরিবেশক ছিদ্দিক মিয়া বলেন, "প্রতিদিন ৩টি ওয়ার্ডের জন্য পণ্য বরাদ্দ থাকলেও অন্য ওয়ার্ডের লোকজনও চলে আসে, এতে সমস্যা তৈরি হয়।" তবে সমাধানে কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের প্রশ্নে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।
বিতরণ কার্যক্রমে নিয়োজিত স্থানীয় ফারুক খান জানান, একটি মাত্র মোবাইল ফোনে স্ক্যানিং কার্যক্রম হওয়ায় বিলম্ব হচ্ছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত সরঞ্জাম বা জনবল বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগের কথাও তিনি বলেননি।
অন্যদিকে, দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা অ্যাডজুটেন্ট মো. শাহাদাৎ হোসেন প্রশিক্ষণে থাকায় তদারকি অনুপস্থিত ছিল। মোবাইল ম্যাসেজ পাঠানো হলেও তার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগীরা দাবি করেন, টিসিবির পণ্য বিতরণে আরও স্বচ্ছতা, নিয়মিত ঘোষণা ও ওয়ার্ডভিত্তিক বুথ চালু করা হোক, যাতে হয়রানি বন্ধ হয় এবং সুবিধাভোগীরা সম্মানের সঙ্গে পণ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
What's Your Reaction?






