নাজিরপুরে গরু বিতরণে গড়মিল, সাংবাদিকদের হেনস্তা

পিরোজপুরের নাজিরপুরে ‘দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় নিবন্ধিত মৎস্যজীবীদের মাঝে বিকল্প কর্মসংস্থানের অংশ হিসেবে বকনা বাছুর বিতরণ কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত গরু বিতরণ কার্যক্রমে ওজন কম, মানহীন বাছুর সরবরাহ এবং প্রকৃত উপকারভোগীদের বাদ দিয়ে বিতরণের অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা। নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি গরুর ওজন ৭০ কেজি হওয়ার কথা থাকলেও দেখা যায়, প্রতিটি গরুর ওজন ৪০-৪৫ কেজির বেশি নয়।
ঠিকাদার পরিচয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম বললেও শেষ পর্যন্ত “শ্যাওলা হাস-মুরগি খামার অ্যান্ড সাপ্লাই সেন্টার” নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিতরণ কার্যক্রম চালানো হয় বলে জানা গেছে।
সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে ঘটনাস্থলে গেলে গরু বিতরণ কার্যক্রম হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফজলে রাব্বির কাছে বক্তব্য চাইলে তিনি এনটিভি অনলাইন ও কালের কণ্ঠের সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ সময় ইউএনও উপস্থিত মৎস্যজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা গরু নিলে নেন, না নিলে প্রকল্প ফেরত যাবে।” বিকাল ৪টার দিকে ইউএনও এবং ঠিকাদার পক্ষের প্রতিনিধি আসাদ দ্রুত একটি গরু বিতরণ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সারোয়ার হোসেন ও তাঁর সহকর্মীরা বাকি গরুগুলো বিতরণ করেন।
মৎস্যজীবী লাল মিয়া বলেন, “আমি একটি গরু পেয়েছি, ওজন হবে ৪০-৪৫ কেজির মতো। ইউএনও বলেছেন নিতে, তাই নিয়েছি।”
এ বিষয়ে উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি কে এম সাঈদ বলেন, “সাংবাদিকদের সঙ্গে ইউএনও’র অশোভন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।”
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, “৭০ কেজি ওজনের গরু সরবরাহের কথা থাকলেও বাস্তবে তা ৩০-৪০ কেজি। এটা জনগণের সম্পদ। আমরা গুণগত পরিবর্তন চাই, লুটপাট নয়। দরকার হলে ঠিকাদারকে নতুন গরু দিতে হবে।"
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, “আমি বিষয়টি শুনলাম। ইউএনও’র সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”
What's Your Reaction?






