কম খরচে বেশি লাভ, আমড়া চাষে ঝুঁকছেন পিরোজপুরের চাষিরা

গাছে গাছে ঝুলছে সবুজের সমারোহ, থোকায় থোকায় নুয়ে পড়েছে টক-মিষ্টি স্বাদের আমড়া। এটি এখন পিরোজপুরের কৃষকদের জন্য শুধু একটি ফলই নয়, বরং কম খরচে বেশি লাভের এক নতুন অর্থনৈতিক দিগন্ত। চলতি মৌসুমে আমড়ার বাম্পার ফলন হওয়ায় এবং উৎপাদন খরচ প্রায় শূন্যের কোঠায় হওয়ায় জেলার চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে আমড়া চাষে ঝুঁকছেন, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে নতুন আশার আলো ছড়াচ্ছে।
দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়া, জলবায়ু ও মাটি আমড়া চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ কারণে পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর, কাউখালী ও নেছারাবাদের মতো উপজেলাগুলোতে পরিকল্পিত এবং অপরিকল্পিতভাবে বাড়ছে আমড়ার বাণিজ্যিক উৎপাদন।
চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আমড়া চাষের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে। চারা রোপণের মাত্র তিন থেকে চার বছরের মধ্যেই ফলন শুরু হয়। একজন চাষি বলেন, "কোনো খরচ না থাকায় যে যেভাবে পারছে আমড়া গাছ লাগাচ্ছে। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছ থেকে প্রতি বছর গড়ে তিন থেকে চার মণ আমড়া পাওয়া যায়।" পাইকাররা সরাসরি বাগান থেকে এই ফল কিনে সারাদেশে সরবরাহ করেন। বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি মণ আমড়া ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
এদিকে, কৃষি বিভাগও এই সম্ভাবনাময় ফলটির পরিকল্পিত চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করছে। পিরোজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার মোঃ রেজাউল হাসান জানান, "মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পতিত ও অনাবাদি জমিতে আমড়াসহ অন্যান্য লাভজনক ফলের গাছ রোপণের জন্য চাষি ও স্থানীয়দের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।"
উল্লেখ্য, পিরোজপুর জেলায় বর্তমানে ৪৬৩ হেক্টর জমিতে আমড়ার বাগান রয়েছে, যা প্রতি বছরই বাড়ছে।
What's Your Reaction?






