গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরার প্রতিবিম্ব ‘জুলাই প্রিলিউড’ পোস্টারে

‘প্রশ্ন নয়, প্রশংসা করতে এসেছি’ — এই বাক্যই যেন প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল এক সময়ের সাংবাদিক সম্মেলনের। প্রশ্ন করার পরিবেশ না থাকায় অনেক সাংবাদিকই যেখানে নিরুত্তাপ ছিলেন, সেখানে যারা ন্যূনতম সাহস করে সত্য উচ্চারণের চেষ্টা করেছিলেন, তাদের ওপর নেমে এসেছিল দমন-পীড়নের খড়গ। আর এই বাস্তবতাকেই শৈল্পিক ভঙ্গিতে প্রকাশ করেছেন চিত্রশিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী তার “জুলাই প্রিলিউড” সিরিজের ৯ম ও ১০ম পোস্টারে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেওয়া জুলাই ২০২৪ ছিল গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক জাগরণের এক সন্ধিক্ষণ। এই পর্বে যে সব কারণ জুলাইকে 'অনিবার্য' করে তুলেছিল, তার অন্যতম ছিল গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ ও চাটুকারিতার প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি। সেই থিমকে কেন্দ্র করে শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী এঁকেছেন তার নতুন দুটি পোস্টার, যেখানে গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ ও বাক-স্বাধীনতার রুদ্ধ চিত্রমালা উঠে এসেছে প্রতীকেরূপে।
উল্লেখ্য, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে ‘জুলাই প্রিলিউড’ শিরোনামে পোস্টার সিরিজটি তৈরি করছেন দেবাশিস চক্রবর্তী। এই সিরিজে তিনি তুলে ধরছেন, কেন জুলাই ছিল অবধারিত, কীভাবে সেদিনের ঘটনাপ্রবাহ আমাদের আজকের বাংলাদেশকে নির্মাণে ভূমিকা রেখেছিল।
প্রকাশিত পোস্টার দুটি সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা (Chief Adviser, GOB) এর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে পোস্টারগুলোর সঙ্গে একটি বার্তায় বলা হয়েছে, “এই পোস্টারগুলো শুধু চিত্র নয়, এগুলো সময়ের দলিল — যা মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনতা কেবল কাগজে লেখা বাক্য নয়, বরং তা রক্ষার জন্য প্রয়োজন হয় কলম, কণ্ঠ ও ক্যানভাসের সাহস।”
পোস্টার দুটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই একে মনে করছেন শিল্পের ভাষায় উচ্চারিত এক সরব প্রতিবাদ এবং অতীত ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের প্রতি এক সতর্ক আহ্বান।
What's Your Reaction?






