খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দুই আঞ্চলিক সংগঠনের ভয়ংকর গোলাগুলি

পাহাড়ের আধিপত্য নিয়ে আবারও রক্ত ঝরল খাগড়াছড়িতে। জেলার দীঘিনালা উপজেলার দুর্গম অঞ্চলে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-প্রসিত) এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-সন্তু লারমা) গ্রুপের মধ্যে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাতে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র ও দীঘিনালা থানা পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের দুর্গম নাড়াইছড়ি এলাকার ডুলুছড়িতে এই ভয়ংকর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইউপিডিএফ (প্রসিত) গ্রুপের সশস্ত্র শাখার কমান্ডার বিপ্লব চাকমার নেতৃত্বে প্রায় ৪০-৪৫ জনের একটি দল এবং জেএসএস (সন্তু লারমা) গ্রুপের সশস্ত্র কমান্ডার জয়দেব চাকমার নেতৃত্বে ৪০-৪২ জনের আরেকটি দল ওই এলাকায় মুখোমুখি হয়। এসময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি শুরু হয়, যা প্রায় ৪০০ রাউন্ড পর্যন্ত গড়ায় বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ৪ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। পরে সশস্ত্র সংগঠন দুটিই তাদের নিহত ও আহত সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে যায়।" এ কারণে নিহত বা আহতদের নাম-পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নিহত চারজন ইউপিডিএফ (প্রসিত) গ্রুপের সামরিক শাখা ‘গণমুক্তি ফৌজ’ বা ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’র সদস্য হতে পারে। তবে ইউপিডিএফ (প্রসিত) গ্রুপের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো তথ্য স্বীকার করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপিডিএফ'র সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, "এমন কোনো সংঘর্ষের বিষয়ে আমি জানি না। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা জানিয়ে থাকি।"
ওসি জাকারিয়া আরও জানান, "ঘটনাস্থলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে থমথমে। আমরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।" ঘটনাস্থলটি অত্যন্ত দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ সেখানে পৌঁছাতে পারেনি।
What's Your Reaction?






