কালকিনিতে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম: দুদকের অভিযানে জালিয়াতির প্রমাণ

মাদারীপুরের কালকিনিতে উত্তর রমজানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে চাঞ্চল্যকর অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরিচালিত এ অভিযানে জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ মেলে।
সরেজমিন তদন্তে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এরপর ১৫ অক্টোবর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
তবে পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদপ্রার্থী মোঃ রোকনুজ্জামানকে বাদ দিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয় মোঃ শিপন খাঁনকে। অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ নিশ্চিত করতে একই তারিখে একটি ভুয়া নম্বরপত্র তৈরি করে নম্বর জালিয়াতির মাধ্যমে শিপনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী রোকনুজ্জামান অভিযোগ করেন, বিগত ১০ বছর ধরে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে কোনো প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে দুদকের শরণাপন্ন হন। প্রমাণসহ অভিযোগ দাখিলের পর দুদক অভিযান চালায় এবং অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়।
অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছি। এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশসহ জমা দেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক বিএড সনদের জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন কি না, তা যাচাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযানে উপস্থিত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুজ্জামান বলেন, “শিক্ষক হচ্ছে জাতি গঠনের কারিগর। এখানে যদি দুর্নীতি হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সেটা ভয়াবহ বার্তা বহন করে।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রমণীকান্ত ভক্ত স্বীকার করেন, সভাপতির চাপে তিনি অনিয়মে জড়াতে বাধ্য হন। তবে তৎকালীন সভাপতি শহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, “আমি কোনো অনিয়মে জড়িত নই। তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের চাপেই এসব হয়েছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
What's Your Reaction?






