আলফাডাঙ্গায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ ভ্যানচালকের মুখে হাসি ফুটালেন ইউএনও রাসেল ইকবাল

টানা অনাবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে পড়েছিল ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার খেটে খাওয়া অসংখ্য মানুষের। বিশেষ করে বিপাকে পড়েন ভ্যানচালকেরা। ঠিক এমন সময় মানবিক উদ্যোগ নিয়ে এসব কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল।
বুধবার (২ জুলাই) দুপুর পৌনে ১টার দিকে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার আরিফুজ্জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উপজেলার ৩০০ জন ভ্যানচালকের মাঝে বিনামূল্যে শুকনো খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
খাদ্যসামগ্রীর প্রতি প্যাকেটে ছিল—১০ কেজি প্যাকেটজাত চাল, ১ কেজি ডাল, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি লবণ, ১ কেজি চিনি, মরিচের গুঁড়া, হলুদের গুঁড়া ও ধনিয়ার গুঁড়াসহ মোট ৮টি পণ্য। ভ্যাটসহ প্রতিটি প্যাকেটের বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার ৯০০ টাকা।
খাদ্য বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাগর হোসেন সৈকত, আরিফুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাদুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা।
সুবিধাভোগী বুড়াইচ গ্রামের ভ্যানচালক সিরাজ সরদার বলেন, “ইউএনও স্যার খুবই মানবিক মানুষ। শীতের সময় তিনি আমাদের বাড়িতে গিয়ে শীতবস্ত্র দিয়েছিলেন। আজ আবার খাদ্য দিয়েছেন। অনাবৃষ্টিতে আমাদের কাজ নেই, আয় নেই। ঠিক এমন সময় স্যার যে খাদ্য দিয়েছেন, তাতে এক থেকে দেড় মাস চলবে। আমরা স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞ।”
একই গ্রামের কাসেম সরদার বলেন, “এখন পর্যন্ত এমন সহযোগিতা আর কেউ করেনি। আল্লাহ ইউএনও স্যারকে আরও বড় করুন।”
হেলেঞ্চা গ্রামের আরেক ভ্যানচালক সাহাবুল আলম বলেন, “আগে-পরে কোনো ইউএনও স্যার আমাদের গরিবের খোঁজ নেননি। রাসেল স্যার শুধু খোঁজই নেন না, আমাদের জন্য নানা উদ্যোগও নিচ্ছেন। আজকের এই খাদ্য পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত। আমি তাঁর জন্য দোয়া করি—আল্লাহ যেন তাঁকে নেক হায়াত দান করেন।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল বলেন, “আষাঢ় মাসে ভারি বর্ষণের সময় স্বল্প আয়ের মানুষদের আয় কমে যায়। বিশেষ করে দিনমজুর শ্রেণির মানুষ বেশি কষ্টে পড়ে। মানবিক বিবেচনায় তাঁদের জন্য এ খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্ট কিছুটা লাঘব করতেই এ উদ্যোগ। ভবিষ্যতেও এই ধরনের সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”
What's Your Reaction?






