৮ বছর ধরে বেতনহীন, ফরিদপুরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মানববন্ধন

দীর্ঘ ৮ বছর ধরে এক টাকাও বেতন পাচ্ছেন না, তবুও শিক্ষার আলো ছড়াতে পিছু হটছেন না ফরিদপুর সদরপুর মহিলা কলেজের ডিগ্রী শাখার শিক্ষক-কর্মচারীরা। এমপিওভুক্তির দাবিতে অবশেষে রাস্তায় নামলেন তারা—বুকে জমানো যন্ত্রণা নিয়ে দাঁড়ালেন মানববন্ধনে।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ১০টায় কলেজ গেট সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাজী বদরুতজামান বদুর সভাপতিত্বে আয়োজিত মানববন্ধনে শিক্ষক-কর্মচারী, তাদের পরিবারের সদস্য ও এলাকার সচেতন নাগরিকরা অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল মান্নান হাওলাদার।
ভুক্তভোগী প্রভাষক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা আর কতদিন মানবেতর জীবন কাটাব? নিজের খরচে কলেজ চালাচ্ছি, অথচ বেতন ভাতা নেই আট বছর ধরে। এটা কি কোনো শিক্ষক সমাজের প্রাপ্য?”
আরেক প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন জানান, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে ২০১৭ সালে ১৪ জন প্রভাষক ও ৮ জন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে তিন শতাধিক ছাত্রী পড়ালেখা করছে। তবুও এমপিওভুক্তির আওতায় না আসায় আমাদের অবস্থা শোচনীয়।”
কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান হাওলাদার বলেন, “শিক্ষকরা নিষ্ঠা আর আত্মত্যাগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত গড়েছেন। পরপর তিনটি বর্ষে শতভাগ পাস করিয়েছেন শিক্ষার্থীদের। এখন সময় হয়েছে রাষ্ট্রের কাছে তাদের স্বীকৃতি পাওয়ার।”
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যার হৃদয় হচ্ছে শিক্ষক—তাদেরই যদি ন্যায্য অধিকার না মেলে, তবে শিক্ষার ভবিষ্যৎ কোথায়? এমন প্রশ্ন এখন প্রতিটি সচেতন মানুষের মুখে।
সভাপতি কাজী বদরুতজামান বদু বলেন, “এমপিওভুক্তি এখন সময়ের দাবি। প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই অবিচার চলতেই থাকবে। কলেজের পূর্ণতা ও শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে ডিগ্রী শাখাকে দ্রুত এমপিওভুক্ত করতে হবে।”
বক্তারা মানববন্ধনে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দাবি না মানলে বৃহত্তর কর্মসূচির দিকে যেতে আমরা বাধ্য হব।”
What's Your Reaction?






