ফারাক্কা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নিয়ে সময়োপযোগী সেমিনার

বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাপনা ও কৌশলগত অবকাঠামো উন্নয়নকে ঘিরে সম্প্রতি রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হলো এক সময়োপযোগী সেমিনার। "ফারাক্কা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের নদী ও অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা" শীর্ষক এই আলোচনাসভা দেশের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনার এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিক, খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও পানি ও পরিবেশ–বিষয়ক বিশ্লেষকগণ।
সভাপতিত্ব করেন সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহবুব খৈয়ম।
সেমিনারে মূলত দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঘিরে আলোচনা হয়—ফারাক্কা ব্যারেজ এবং দ্বিতীয় পদ্মা সেতু।
ভারতের তৈরি ফারাক্কা ব্যারেজ ১৯৭৫ সালে চালু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ, বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। গঙ্গা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ হ্রাসের ফলে নদীশুকিয়ে যাওয়া, মরুকরণ, কৃষি উৎপাদন কমে যাওয়া এবং জলবায়ু ও পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে—এমনটাই বলেন আলোচকরা।
আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয়ভাবে বিষয়টি তুলে ধরার ওপর জোর দেন তারা। আলোচকরা মনে করেন, একবিংশ শতকে নদীর প্রবাহ কেবল জলবণ্টনের নয়, বরং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক টেকসইতার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রথম পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অভূতপূর্ব উন্নয়নের সূচনা করেছে। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে আরও গতিশীল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে, যা জাতীয় উৎপাদন, বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থানেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন বিশেষজ্ঞরা।
সেমিনারে বক্তারা নদীনির্ভর উন্নয়ন কৌশল এবং মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে টেকসই পরিবেশনীতি, স্বচ্ছতা ও জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানান।
এ ধরনের সেমিনার শুধু সমস্যা চিহ্নিত করাই নয়, বরং সমাধানের পথ খুঁজতেও সহায়ক হয়, এমনটাই মত অনেক অংশগ্রহণকারীর।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সঠিক সিদ্ধান্ত ও কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর—এটি সেমিনারের একটি প্রধান বার্তা হয়ে ওঠে।
What's Your Reaction?






